Showing posts with label জামায়াতের সাফল্য. Show all posts
Showing posts with label জামায়াতের সাফল্য. Show all posts

Friday, December 20, 2019

বিশ্বব্যাপী দ্বীন ইসলামের পূনরুত্থানে এবং মানব কল্যাণে জামায়াতে ইসলামীর অবিস্মরণীয় সাফল্য

-  শাহাদাতুর   রহমান   সোহেল   

বর্তমানে বিশ্বব্যাপী দ্বীন ইসলামের পূনরুত্থানে এবং মানব-কল্যাণে জামায়াতে ইসলামীর অবিস্মরণীয় অবদান রয়েছে।অন্য অনেক দলের দেশভিত্তিক ছোট ছোট অবদানকেও অনেক বড় করে তুলে ধরা হয়। কিন্তু জামায়াতে ইসলামীর বিশ্বব্যাপী  অবিস্মরণীয় অবদান থাকার পরও এর যৎসামান্য প্রচারও করা হয় না -এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। এটা কোরআনের নির্দেশেরও  খেলাফ। পবিত্র কোরআনে সুরা আদদোহায় বলা হয়েছে: “ওয়া আম্মা বিনি’মাতি রাব্বিকা ফাহাদ্দিশ” অর্থাৎ “তোমাদের যে নিয়ামত দেয়া হয়েছে তা মানুষের কাছে প্রচার করে দাও”। সর্ব পর্যাযের জনশক্তির উৎসাহ-উদ্দীপনা বৃদ্ধির জন্যও এটা করা উচিত। জামায়াতে ইসলামীর অবিস্মরণীয় অবদান সম্পর্কে কিছু তথ্য এখানে কিছু পোষ্টে তুলে ধরা হলো:













13) ইফসু(IFSO) এবং এবং আন্তর্জাতিকক্ষেত্রে শিবিরিনেতা ডাঃ সৈয়দ আবদুল্লাহ মোঃ তাহেরের তৎপরতা

14)  ও, আই, সি, গঠন ও জামায়াতে ইসলামীর অবদান

15)  মালয়েশিয়ার ইসলামী আন্দোলন, আনোয়ার ইব্রাহীম এবং জামায়াতে ইসলামী

16) বসনিয়া-হার্জেগোভিনার স্বাধীনতা অর্জন, এর মর্মন্তুদ ইতিহাস ও প্রভাব-প্রতিক্রিয়া এবং জামায়াত ইসলামী

17) কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থা, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে এর প্রয়োগ এবং জামায়াতে ইসলামী

18) খোলা চোখে বাংলাদেশের জন্য জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের অবদান

19) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে উদ্দেশ্য করে তুরস্কের প্রখ্যাত আলেম নুরুদ্দিন ইলদিজের লেখা একটি চিঠি।

20)  মিশরে ইখওয়ানুল মুসলেমীন, বিশ্বব্যাপী এর বিস্তার এবং জামায়াতে ইসলামী

21)  বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস এবং অবদান


23) গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী

24) শিবির সভাপতি ব্যারিষ্টার হামিদ হোসাইন আজাদের বিশ্বব্যাপী মানবসেবায় নেতৃত্ব প্রদান

25) তুরস্কে অনুষ্ঠিত হওয়া ESAM কনফারেন্সে শহীদ মাওলানা নিজামীকে নিয়ে প্রেজেন্টেশন...

26) ইসলামী ব্যাংক প্রতিষ্ঠা ও আন্তর্জাতিকভাবে এর বিস্তার এবং জামায়াতে ইসলামী

27) সুদানে ইখওয়ানুল মুসলেমিনের সাফল্য এবং জামায়াতে ইসলামী

28) অধ্যাপক গোলাম আযমের ফর্মুলায় নোবেল বিজয় - মুহাম্মদ ইয়াছিন আরাফাত






উপরে কিছু অবদান তুলে ধরা হলো। পরে আরো দেয়া হবে ইনশাল্লাহ। এসব তুলে ধরার উদ্দেশ্য উল্লাস-অহংকার সৃষ্টি নয়। মনে রাখতে হবে হযরত সোলাইমান (আঃ)-এর এই প্রবাদতুল্য উক্তি: “অহংকার পতনের মূল”। এসবের উদ্দেশ্য ২টি: ১) আল্লাহ’র শুকরিয়ার জযবা তৈরী এবং ২) উৎসাহ-উদ্দীপনা সৃষ্টি করে ইসলামী আন্দোলনের কাজকে অধিকতর এগিয়ে নেয়া। এর জন্য মহান আল্লাহ আমাদের তৌফিক দান করুন, আমীন। 


Wednesday, December 18, 2019

বর্তমানে তুরস্কের বিজয়ী ইসলামী শক্তির সাথে জামায়াতে ইসলামী সম্পর্কের নানা খন্ডচিত্র এবং অন্যান্য।

-  শাহাদাতুর   রহমান   সোহেল 

                    তুর্কী ওসমানী খেলাফত ১৪শ থেকে প্রারম্ভিক ২০শ শতাব্দীর শুরু প্রায় ৬ শত বছর পর্যন্ত মুসলিম উম্মাহ’র নেতৃত্ব প্রদান করে এবং তারা  সম্স্ত দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপ দখল  করে। তারা দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপ, পশ্চিম এশিয়া ও উত্তর আফ্রিকার বেশিরভাগ অঞ্চল প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণ করত। ১৯২৪ সালে তুর্কী খেলাফতের পতনের পর কামালের চরম সেকুলার শাসন প্রতিষ্ঠিত হয় এবং মুসলিম উম্মাহ ইসলামী নেতৃত্বশূণ্য হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় ইখওয়ান-জামায়াতের প্রেরণা ও সহযোগিতায় তুরস্কে ইসলামকে পূনরায় বিজয় করার সংগ্রাম গড়ে উঠে এবং বিস্তার লাভ করে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাথেও তাদের নিবিড় সম্পর্ক গড়ে উঠে। তুরস্কে ইখওয়ান-জামায়াতের সামগ্রিক তৎপরতা অত্যন্ত ব্যাপক। এখানে তুরস্কের প্রাধান্যশীল ইসলামী আন্দোলনের সাথে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সম্পর্কের কিছু খন্ডচিত্র ও এর সাথে সম্পর্কিত অন্যান্য কিছু বিষয় নীচে দেওয়া হলো: 

১) তুরস্কে ইসলামী শক্তির বিজয়, ড: নাজমুদ্দীন আরবাকান এবং জামায়াত ইসলামী

২) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে উদ্দেশ্য করে তুরস্কের প্রখ্যাত আলেম নুরুদ্দিন ইলদিজের লেখা একটি চিঠি।

৩) তুরস্কে মাওলানা মওদুদী ও তাফহীমুল কুরআনের প্রভাব










             মুসলিম উম্মাহ’র নেতৃত্বদানকারী এবং বর্তমান বিশ্বে একটি প্রাধান্যশীল দেশ তুরস্কে ইখওয়ান-জামায়াত সম্পর্কিত শক্তির ব্যাপক সাফল্য অত্যন্ত উৎসাহব্যাঞ্জক। তবে কাজ এখনো অনেক বাকী। আমরা কায়মনোবাক্যে দোয়া করি- মহান আল্লাহ উক্ত ইসলামী আন্দোলনকে তুরস্কে আরো এগিয়ে যাওয়ার এবং চুড়ান্ত মঞ্জিলে-মকসুদে পৌঁছার তৌফিক দান করুন, আমিন। তবে আল্লাহ না করুন, দেশী-বিদেশী শক্তির চক্রান্তে যদি সাময়িক কোন বিপর্যর আসে হতাশ হওয়া যাবে না। বার বার চেষ্টা করেও যখন এ শক্তিকে দমিয়ে দেয়া যায়নি, বরং অধিকতর শক্তি সঞ্চয় করে পূণরুত্থান ঘটেছে তখন আগামীতেও এ শক্তি আরো এগিয়ে যাবে ইনশা-আল্লাহ। 

রিসেপ তাইয়্যেব এরদোগান, খেলাফতের পূণরুদ্ধার নিয়ে এক বিশেষ ভিডিও দেখুন প্লীজ


Friday, October 25, 2019

বিপ্লবী ইসলামী সাহিত্য সৃষ্টি: বিশ্বব্যপী ইসলামী পূণর্জাগরণে এর অসাধারণ অবদান

-  শাহাদাতুর   রহমান   সোহেল

জামায়াতে ইসলামী রচিত বিপুল ইসলামী সাহিত্য ইসলামকে পূর্ণাঙ্গ, বাস্তব সম্মত, চিরকালীন ও অত্যাধুনিক এবং আধুনিক সকল অন্যান্য মতবাদ ও জীবন ব্যবস্থার মোকাবেলায় শ্রেষ্ঠ জীবন ব্যবস্থা হিসাবে প্রমান করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের H. Haddad- এর মতে খৃষ্টান চিন্তাবিদ বলেন- thus Islam is posited as the only viable of a better world order., This (Islamic) religious literature is modern in idiom as well content, It takes the twentieth century seriously. Those who denigrate reivalists and relegate them to the Dark ages, the middle Ages or the seventh century are, at best completely, missing the dynamics of the relevance or religion for modern life, or at worst, purposefully ignoring the new developments in the content and meaning of various Islamic doctrins, ( Islamic Awakening in Egypt. Asq, Volume 9 Number 3, Page 255) অর্থাৎ ``এই ভাবে ইসলাম উৎকৃষ্টতর একক এক বিশ্ব ব্যবস্থার আস্থাশীল রূপরেখা হিসাবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। ইসলামী সাহিত্য ভাষা এবং বিষয় সবদিক থেকেই আধুনিক যা নিশ্চিতভাবেই বিশ শতকের। যারা ইসলামী পূণর্জাগরণবাদীদের গাল দেয় এবং তাদেরকে অন্ধকার যুগীয়, মধ্যযুগীয় এবং সপ্তম শতকের মানুষ বলে অভিহিত করে তারা আধুনিক জীবনে ধর্মের সাজুস্যতা ধরতে সম্পূর্ন ব্যর্থ হন অথবা ইসলামের বিভিন্ন মতবাদের অর্থ ও বিষয়ে যে উৎকর্ষতা এসেছে তা উদ্দেশ্যমূলকভাবে উপেক্ষা করেন।'' এখানে আলোচ্য্ বিষয়টিতে জামায়াতে ইসলামী ও ইখওয়ানুল মুসলেমীনেরই অবদান। এক্ষেত্রে জামায়াতে ইসলামীর ভূমিকাই অগ্রগন্য । ১৯৭৪ লন্ডনে আল্লামা মওদূদী রহ: এর সম্বর্ধনার উদ্দেশ্যে আয়োজিত এক বিরাট সুধী সমাবেশে বিখ্যাত ইখওয়ানী চিন্তাবিদ মক্কা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসার মুহাম্মদ কুতুব বলেন "সর্বযুগে ও সকল দেশেই ইসলামী চিন্তাবিদ পয়দা হয়। এযুগেও দুনিয়ায় বেশ কিছু সংখ্যক উল্লেখযোগ্য ইসলামী চিন্তাবিদ রয়েছেন। আপনারা জানেন (একটু মুচকি হেসে) আমিও কিছু চিন্তা করে থাকি। কিন্তু বর্তমান বিশ্বে মাওলানা মওদূদীই শ্রেষ্ঠতম ইসলামী চিন্তাবিদ হিসাবে স্বীকৃত। ইসলামকে এমন সুন্দরভাবে সহজবোধ্য ভাষার সাজিয়ে আর কেউ পরিবেশন করতে সক্ষম হয়নি। এ ব্যপারে তিনি সত্যিই অতুলনীয়।'' জামায়াতে ইসলামী কর্তৃক বর্তমানেও উৎকৃষ্টতম ইসলামী সাহিত্য রচিত হয়েছে এবং হচ্ছে। এসব সাহিত্য বিশ্বব্যপী ইসলামী পূণর্জাগরণে ভূমিকা পালন করেছে এবং করছে। 

Tuesday, June 12, 2018

ইরানে ইসলামী বিপ্লব ও জামায়াতে ইসলামীর অবদান



- শাহাদাতুর   রহমান   সোহেল

            ১৯৭৯ সালে সংঘটিত ইরানের ইসলামী বিপ্লব সম্পর্কে সবাই অবগত। এই ইরানের ইসলামী বিপ্লবের অন্যতম প্রধান আদর্শিক প্রেরণা ছিল জামায়াতে ইসলামী কর্তৃক প্রচারিত বিপ্লবী ইসলামী সাহিত্য। ইরানের ইসলামী বিপ্লবের সময় সখানকার মানুষের হাতে হাতে ছিল সাইয়েদ আবুল আ'লা মওদূদী, সাইয়েদ কুতুব শহীদ ও আল্লামা  ইকবালের বই। এর মধ্যে আল্লামা মওদূদী রহ: এর বই ই ছিল সবচেয়ে বেশী। তাইতো ইরানের ইসলামী বিপ্লবের নেতৃবৃ্ন্দ স্বীকার করেছেন যে, ইরানের ইসলামী বিপ্লবের জন্য শহীদ হাসানুল  বান্না, শহীদ কুতুব, ইকবালের কাছে যেমন তারা ঋণী, মাওলানা মওদূদী রহ এর কাছেও তারা ঋণী। কারণ তার সাহিত্য তাদেরকে ইসলামী বিপ্লব সাধনে প্রেরণা যুগিয়েছে" ( ইসলামী পূণর্জাগরণ ও মাওলানা আবুল আলা মওদূদী, অধ্যাপক মুহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস, সাপ্তাহিক সোনার বাংলা, ৫০ বছর পূর্তি সংখ্যা ১৯৯১ ইং) ইতিহাসবেত্তা ফিলিপ জেনকিন্স বলেন, Mawdudi even had a major impact on Shia Iran, where Ayatollah Ruhollah Khomeini is reputed to have met Mawdudi as early as 1963 and later translated his works into Farsi. “To the present day, Iran’s revolutionary rhetoric of ten draws on his themes. (tnr. com The New Republic “The Roots of Jihad in India” by Philip JENKINS, December 24, 2008) অর্থাৎ ‍‌‌‌‌‌‌''এমনকি শিয়া অধ্যুষিত ইরানেও মওদুদীর বড় ধরণের প্রভাব আছে।  ইরানের ইসলামী বিপ্লবের নেতা আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনী ১৯৬৩ সালে মাওলানা মওদুদীর সাথে সাক্ষাত করেন, পরবর্তীতে ইমাম খোমেনী মওদুদীর বইগুলো ফার্সি ভাষায় অনুবাদ করেন।  এখনো পর্যন্ত প্রায়শঃই ইরানের ইসলামী সরকার মাওলানা মওদুদীর কর্মপন্থা অনুসরন করে থাকে।'' উস্তাজ সাইয়েদ আবুল আ'লা মওদূদী (রহ.)-এর ছেলে ড. আহমাদ ফারুক মওদূদীর একটি উক্তি এখানে উল্লেখ করা হলো: ১৯৭৯ সালে পাকিস্তানের লাহোর থেকে প্রকাশিত Roz Naame নামক একটি পত্রিকায় ড. আহমাদ ফারুক মওদূদীর লেখা 'Two brothers- Maududi and Khomeini' বইয়ের ১২৯ পৃষ্ঠার কিয়দংশ প্রকাশিত হয়। সেখানে ড. আহমাদ লিখেছিলেন- Allama Khomeini had a very old and close relationship with Abba Jaan (father). Aayaatullah Khomeini translated his (fathers) books in Farsi and included it as a subject in Qum. অর্থাৎ ‍‌‌‌‌‌‌“আব্বাজানের সঙ্গে আল্লামা খোমেনীর খুবই অন্তরঙ্গ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। জনাব খোমেনী আব্বার বইপত্র ফার্সিতে অনুবাদ করেছিলেন এবং কোম (Qom)-এ সেগুলো পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন”। এখানে উল্লেখ্য যে, মাওলানা মওদূদী ও সাইয়েদ কুতুবের অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ রচনাবলির ফার্সি অনুবাদক হাদী খোরাসানীর সঙ্গে ১৯৬৮ সালে হজ্বব্রত পালনকালে পাকিস্তান জামায়াতের নায়েবে আমির মৌলানা খলিল আহমাদ হামিদী সাক্ষাত করেছিলেন। “মাওলানা মওদূদী রহঃ ও তাত্ত্বিক আলোচনা” নামের ফেইসবুক গ্রুপে নূরুল হুদা হাবীব “ইরানের ইসলামী বিপ্লব, মাওলানা মওদূদী ও তৎকালীন পাকিস্তান জামায়াত” শীর্ষক এক নিবন্ধে লিখেন: “১৯৭৯ সালের মধ্য জানুয়ারিতে বিপ্লব সংঘটিত হলে ২২ শে ফেব্রুয়ারি মাওলানা মওদূদীর বিশেষ বার্তা সহ দলীয় আরেক শীর্ষ নেতা মিয়া তুফাইল মুহাম্মদ পাকিস্তান থেকে তেহরানের উদ্দেশ্যে উড়াল দেন। জামায়াত সহ মুসলিম বিশ্বের সমমনা সংগঠনসমূহের নেতৃবৃন্দের এক মিলনমেলায় পরিণত হয় তেহরান। বলার অপেক্ষা রাখেনা, মুসলিম ব্রাদারহুড এ মিলনমেলার আয়োজনে মূখ্য ভূমিকা পালন করেছিল। ইরানের তৎকালীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী ইবরাহীম ইয়াজদি (মৃ. ২০১৭) ব্যক্তিগতভাবে তার নিজ বাসায় মিয়া তুফাইলের মেহমানদারী করেছিলেন। গভীর রাত পর্যন্ত তারা সদ্যঘটিত বিপ্লব এবং বিশ্বব্যাপী ইসলামী আন্দোলন প্রসঙ্গে আলাপ করেন৷ সে রাতের আলাপচারিতার ব্যাপারে পরবর্তীতে জনাব তুফাইল মন্তব্য করেছিলেন- "Conversation not of tougues, but of hearts" ............. পাকিস্তান জামায়াতের অন্যতম বর্ষীয়ান নেতা জনাব লিয়াকত বেলুচ বিপ্লবের আগে-পরে খোমেনীর সঙ্গে তিন তিনবার সাক্ষাত করেছিলেন। ২০১৯ সালে লাহোরে ইরানের ইসলামী বিপ্লবের ৪০ তম বার্ষিকী উদযাপনের এক আলোচনা সভায় তিনি এ বিপ্লবের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। পাশ্চাত্যের অনুকরণের বাইরে গিয়ে ইরান ভিন্নধর্মী একটি রাষ্ট্রব্যবস্থা কায়েম করেছে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেছিলেন।” বিশ্বব্যাপী ইসলামী আন্দোলনের কর্ণধার আল্লামা সাইয়্যেদ আবুল আ’লা মওদুদী ১৯৭৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ইন্তেকালের পর তাঁর নামাজে জানাযায় আয়াতুল্লাহ খোমেনীর বিশেষ প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া এখানে উল্লেখ্য যে, আল্লামা সাঈদী ইরানে ইসলামী বিপ্লবের প্রথম বার্ষিকীর আমন্ত্রিত মেহমান ছিলেন।  ১৯৮৩ সালে আয়াতুল্লাহ খোমিনীর আমন্ত্রনে ইরানের বিভিন্ন এলাকা সফর করে তিনি বিভিন্ন মাহফিলে কোরআনের তাফসীর পেশ করেন এবং বিভিন্ন সেমিনার-সিম্পোজিয়ামে প্রধান অতিথি হিসাবে অংশগ্রহণ করেন।

            আধুনিক যুগে ইরানের ইসলামী বিপ্লব এক অনন্য ঘটনা। ইসলামী বিপ্লবের উষালগ্নে পরিকল্পিত বোমা বিস্ফারনের মাধ্যমে ৭২ জন নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিকে হত্যা, ইরাক কর্তৃক চাপিয়ে দেয়া যুদ্ধ, আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক অবরোধ ইত্যাদিকে স্বার্থকভাবে মোকাবেলা করে ইরানের ইসলামী বিপ্লবের টিকে থাকা এর শ্রেষ্ঠত্বের নিদর্শন। সারা পৃথিবীর কোন দেশে যখন ইসলামী সরকার ছিল না তখন ইরানের এই ইসলামী বিপ্লবের সফলতা সারা বিশ্বের ইসলামী আন্দোলনকে বিপুল প্রেরণা দান করেছে। ইরানের ইসলামী শক্তি শুধু নিজ দেশে ইসলামী বিপ্লব সাধন করেই ক্ষান্ত হয়নি । দেশে দেশে চলমান ইসলামী আন্দোলন গুলোকেও ইরান দৃঢ় সমর্থন, শক্তি এবং অর্থ যোগানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ফিলিস্থিনের ইন্তিফাদা, আলজেরিয়ার ইসলামী পূণর্জাগরণ, তিউনিশিয়া, মিশর এবং জর্দানসহ মধ্যপ্রাচ্যের অধিকংশ দেশে ইসলামী আন্দোলনের প্রতি ইরান সমর্থন ও শক্তি যুগিয়ে চলেছে। যেমন- আলজেরিয়ার জনসমর্থনপুষ্ট ইসলামী আন্দোলনের প্রতি ইরান দৃঢ় সমর্থন ব্যক্ত করে এবং এর উপর আলজেরিয়ার স্বৈরাচারী সরকারের জুলুম নির্যাতনের প্রতিবাদ জানায়। ইরানপন্থী লেবানানী হিজবুল্লাহদের সাফল্যও এখানে উল্লেখ্য । হিজবুল্লাহদের সাথে যুদ্ধে পরাজিত হয়ে ইসরাইলী বাহিনী দক্ষিণ লেবানান থেকে বিতাড়িত হয়। ইসরাইল ১৯৭৮ সালে দক্ষিন লেবানানে প্রবেশ করে এবং ইসরাইলের উত্তর সীমান্তকে সুরক্ষিত রাখার জন্য দক্ষিন লেবানানে স্থানীয় এক মিলিশিয়া বাহিনী গড়ে তোলে। জাতি সংঘ নিরাপত্তা পরিষদ দক্ষিন লেবানন থেকে সকল ইসরাইলী সৈন্য প্রত্যাহারের আহবান জানিয়ে ৪২৫ নম্বর প্রস্তাব অনুমোদন করে। তবে ইসরাইল একে তোয়াক্কা করেনি। পরবর্তীতে ১৯৮২ সালে ইসরাইলী বাহিনী লেবানানে নৃশংস আগ্রাসন চালায় এবং তারা তিনমাস ধরে রাজধানী বৈরুতে অবরোধ করে রাখে। ইসরাইলী বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র জিহাদের লক্ষ্যে ইলামপন্থীরা গড়ে তোলে সুদক্ষ যোদ্ধাদল হিজবুল্লাহ। হিজবুল্লাহদের সাথে ইসরাইলী বাহিনীর অগণিত লড়াই সংঘটিত হয়েছে। প্রাণহানী ঘটেছে উভয় পক্ষে ব্যাপক ভাবে। হিজবুল্লাহর অনমনীয় মনোভাব লেবানানের মুসলমানদের মধ্যে আশার সঞ্চার করে। দখলদারীর প্রথম কয়েক বছরেই ইসরাইল দক্ষিণ লেবানান থেকে ফিলিস্তিনী যোদ্ধাদের হটিয়ে দিতে সমর্থ হয়। এরপর পরই হিজবুল্লাহর অভ্যুদয় ইসলাইলীদের হিসাব গরমিল করে দেয়। হিজবুল্লাহদের সশস্ত্র জিহাদের এক পর্যায়ে ইসরাইলের নিজের এলাকাতেই হিজবুল্লাহদের হাতে তিনশত নৌসেনা ও ফরাসী সৈন্য নিহত হয়। এরপর পরই আমেরিকানরা তাদের বাহিনী পূণরায় নিযোগ করে। মার্কিন ডেষ্ট্রয়ার থেকে লেবানানের গ্রাম ও হিজবুল্লাহ অবস্থানের উপর ব্যাপক বোমা বর্ষণ করা হয়। তবে এতেও মার্কিনীরা হিজবুল্লাহকে দমাতে পারেনি। ১৯৮৫ সালের ইসরাইল নিতানী নদীর উত্তর দিক থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়। এ সফলতার পর ১৫ বছর ধরে হিজবুল্লাহ ইসরাইলী বাহিনীর উপর তাদের আক্রমন অব্যাহত রাখে। দক্ষিণ লেবানানে দখলদার বাহিনীর সাথে তাদের প্রতিরোধ সংগ্রাম চলে প্রতিদিনই। হিজবুল্লাহ বাহিনীকে স্তব্ধ করে দেয়ার জন্য ইসরাইল সব ধরণের কৌশলই অবলম্বন করে। তাদের সব অপকৌশল ব্যর্থ হয়েছে। এ অবস্থায় মে ২০০০ ইং তারিখে ইসরাইল দক্ষিণ লেবানান থেকে তার সম্পূর্ণ বাহিনী প্রত্যাহার করে নেয়। ১৯৪৮ সালে ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর আরব রাষ্ট্র গুলোর সাথে সকল যুদ্ধে ইসরাইলী বিজয় অর্জন করে এবং আরব রাষ্ট্রগুলোর ভূখন্ড একের পর এক দখল করে। এবারই প্রথম হিজবুল্লাহ বাহিনীর সাথে সশস্ত্র যুদ্ধে পরাজিত হয়ে ইসরাইল কোন আরব ভূখন্ড থেকে বিতাড়িত হয়। এরপর ২০০৬ সালে ইসরাইলের ২য় লেবানান যুদ্ধে ইসরাইল হিজবুল্লাহর কাছে ২য়বার পরাজয় বরণ করে। ইরানের ইসলামী বিপ্লাব সম্পর্কে আলোচনা প্রসংগে কিছুটা দীর্ঘ হলেও হিজবুল্লাহদের সাফল্য সম্পর্কে আলোচিত হল। এ হিজবুল্লাহদের এ সাফল্যের পিছনে আদর্শিক প্রেরণা, সমর্থন এবং শক্তির প্রধান উৎস ছিল ইরানের ইসলামী সরকারে। আফগানিস্তান জিহাদেও ইরানের ইসলামী সরকারের অবদান রয়েছে। আফগানিস্তান জিহাদ চলাকালে প্রায় ১৫ লক্ষ আফগান উদ্বাস্তুকে ইরান আশ্রয় দিয়েছে। সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে সশস্ত্র জিহাদে বিভিন্নভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে। এভাবে ইরানের ইসলামী বিপ্লবী সরকার বিশ্ব ইসলামী আন্দোলনের ক্ষেত্রে বিরাট শক্তি সৃষ্টি করে চলেছে। 

শিয়া হিসাবে তাদের কিছু ত্রুটি আছে, কিন্তু তারা ইসলাম ও মুসলমানদের পক্ষে যে বিরাট অবদান রাখছে তার স্বীকৃতিও দেওয়া উচিত।

আল-কোরআন ও হাদীসে পারস্য তথা ইরান সম্পর্কে গুরুত্বসহকারে আলোচিত হয়েছে। পবিত্র কুরআনের সুরা জুমায় বলা হয়েছে:   

هُوَ الَّذِیۡ بَعَثَ فِی الۡاُمِّیّٖنَ رَسُوۡلًا مِّنۡهُمۡ یَتۡلُوۡا عَلَیۡهِمۡ اٰیٰتِهٖ وَ یُزَکِّیۡهِمۡ وَ یُعَلِّمُهُمُ الۡکِتٰبَ وَ الۡحِکۡمَۃَ ٭ وَ اِنۡ کَانُوۡا مِنۡ قَبۡلُ لَفِیۡ ضَلٰلٍ مُّبِیۡنٍ ۙ(۲) وَّ اٰخَرِیۡنَ مِنۡهُمۡ لَمَّا یَلۡحَقُوۡا بِهِمۡ ؕ وَ هُوَ الۡعَزِیۡزُ الۡحَکِیۡمُ(۳)

অর্থাৎ ‍‌‌‌‌‌‌তিনিই উম্মীদের মধ্যে একজন রাসূল পাঠিয়েছেন তাদের মধ্য থেকে, যিনি তাদের কাছে তেলাওয়াত করেন তার আয়াতসমূহঃ তাদেরকে পবিত্র করেন এবং তাদেরকে শিক্ষা দেন কিতাব ও হিকমত; যদিও ইতোপূর্বে তারা ছিল ঘোর বিভ্ৰান্তিতে; এবং তাদের মধ্য হতে অন্যান্যদের জন্যও যারা এখনো তাদের সাথে  মিলিত হয়নি। আর আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময় (সুরা জুমা: ২ ও ৩ আয়াত)।

“অন্যান্যদের জন্যও যারা এখনো তাদের সাথে  মিলিত হয়নি” - এই আয়াতের উদ্দীষ্ট হলো নিঃসন্দেহে কিয়ামত পর্যন্ত আগমনকারী বিভিন্ন দেশের মুসলিম। ইকরিমা ও মুজাহিদ থেকে অনুরূপ বৰ্ণিত হয়েছে। এর মধ্যে বিশেষভাবে পারস্যবাসীরা অর্থাৎ ইরানীরা । সহীহ হাদীস থেকে তা জানা যায়: আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বৰ্ণনা করেন, আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কাছে বসা ছিলাম, এমতাবস্থায় সূরা জুমুআ অবতীর্ণ হয়। তিনি আমাদেরকে তা পাঠ করে শুনান। তিনি (وَآخَرِينَ مِنْهُمْ لَمَّا يَلْحَقُوا بِهِمْ) পাঠ করলে আমরা আরয করলামঃ ইয়া রাসূলুল্লাহ, এরা কারা? তিনি নিরুত্তর রইলেন। দ্বিতীয়বার, তৃতীয়বার প্রশ্ন করার পর তিনি পার্শ্বে উপবিষ্ট সালমান ফারেসী (রা)-এর গায়ে হাত রাখলেন এবং বললেনঃ যদি ঈমান সুরাইয়া নক্ষত্রের সমান উচ্চতায়ও থাকে, তবে তার সম্প্রদায়ের কিছুলোক সেখান থেকেও ঈমানকে নিয়ে আসবে [বুখারী: ৪৮৯৭, ৪৮৯৮, মুসলিম: ২৫৪৬, তিরমিযী: ৩৩১০] অন্য হাদীস নীচে দেয়া হলো:

হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত: রাছুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন:“দ্বীন যদি সুরাইরা নক্ষত্রের নিকটেও থাকে তাহলেও পারসিয়ানদের কোন একজন অথবা তাদের কোন এক সন্তান তা হাসিল করবে” (মুসলিম হাদীস নং ৪৬১৮, তিরমিযী হাদীস নং ৩১৮৪, ৩২৩২, ৩৮৬৮, মুসনাদে আহমদ হাদীস নং ৭৭৩৫) অনেকে মনে করেন এই হাদীসসমূহ ইমাম আবু হানিফা (রহঃ) সম্পর্কে বলা হয়েছে। তবে ইমাম আবু হানিফা (রহঃ) তাবেয়ী ছিলেন । কাজেই তখনো দ্বীন সুরাইরা নক্ষত্রের নিকটে যাওয়ার অর্থাৎ দ্বীন পৃথিবী থেকে দূরে যাওয়ার পরিস্থিতি হয় নি । কাজেই এসব হাদীস আধুনিক যুগের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য মনে হয়। আল্লাহ ভালো জানেন। 


See these video:


Monday, March 12, 2018

ঐতিহাসিক ১১ মে কোরআন দিবস: কুরআনের মর্যাদা রক্ষায় মাইলস্টোন এবং জামায়াতে ইসলামী

-  শাহাদাতুর   রহমান   সোহেল

১১ মে ঐতিহাসিক কুরআন দিবস। প্রতিবছর ১১ মে এটি কুরআন দিবস হিসাবে পালিত হয়ে থাকে। ১৯৮৫ সালের ১১ মে কুরআনের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করার জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জে ঈদগাহ ময়দানে আয়োজিত সমাবেশে সংঘটিত হয় এক পৈশাচিক, নারকীয় হত্যাকান্ড। ১৯৮৫ সালের এই দিনে চাঁপাইনবাবগঞ্জে পুলিশের গুলিতে আটজন মানুষ মৃত্যুবরণ করে। দিনটিকে স্মরণে রাখার জন্য সেই থেকে এই দিবস পালিত হয়ে আসছে। ঘটনার সূত্রপাত ভারতে ১৯৮৫ সালের ১২ এপ্রিল। এদিন ভারতের দুইজন উগ্র সাম্প্রদায়িকতাবাদী নাগরিক পদ্মপল চোপরা ও শীতল সিং কোরআনের সকল আরবি কপি ও অনুবাদ বাজেয়াপ্ত করার জন্য কলকাতা হাইকোর্টে একটি রীট আবেদন করে। রীটে বলা হয়, কুরআনে এমন কিছু আয়াত আছে যেখানে কাফির ও মুশরিকদের হত্যা এবং তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রেরণা দেয়া হয়েছে, তারা কুরআনে উল্লেখিত সূরা বাকারার ১৯১নং আয়াত ও সূরা তওবার ৩১ নং আয়াতের রেফারেন্স দিয়ে মামলা দায়ের করেছিল। কোরআন যেহেতু কাফের মুশরিকদের বিরুদ্ধে লড়াই করা, তাদের হত্যা করার কথা বলেছে সেহেতু কুরআন একটি সাম্প্রদায়িক উস্কানী দাতা গ্রন্থ এবং এই গ্রন্থ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার জন্ম দিতে পারে। তাই একে বাজেয়াপ্ত করার দাবি তুলে মামলা দায়ের করে। ভারতীয় সংবিধানের ২২৩ নং ধারা সি আর পিসি ১১৫(ক) ও ২৯৫ (ক) উদ্ধৃতি দিয়ে তারা আল কোরআনকে ভারতীয় সংবিধান বিরোধী বলে উল্লেখ করে। বিচারপতি মিসেস পদ্মা খাস্তগীর মামলা গ্রহণ করেন। তিনি ১২ই এপ্রিল এ বিষয়ে তিন সপ্তাহের মধ্যে এফিডেভিট প্রদানের জন্য রাজ্য সরকারের প্রতি নির্দেশ দেন। এ ঘটনায় গোটা ভারতে মুসলমানদের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বিশ্বের প্রতিটি মুসলিম দেশ এর প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে।

কুরআনকে বাজেয়াপ্ত করার মামলার খবর ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে কলকাতাসহ সারাবিশ্বে প্রতিবাদের ঝড় উঠে। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়। ১০ মে জুমার নামাজ শেষে বায়তুল মোকাররম মসজিদ থেকে হাজার হাজার ইসলামী ছাত্র-জনতার মিছিল ও সমাবেশে মিলিত হলে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। সারাদেশের মত চাঁপাইনবাবগঞ্জ ঈদগাহ ময়দানে আয়োজন করা হয় এক প্রতিবাদ সমাবেশ। ১১ মে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ঈদগাহ ময়দানে আয়োজিত সমাবেশে ১৪৪ ধারা জারি করে পুলিশ। এদিন্ ইসলামী জনতা শুধুমাত্র দোয়া করার অনুমতি চাইলে তা না দিয়ে জনতার উপর গুলী বর্ষণ করে পুলিশ। এতে স্কুল ছাত্র, কৃষক, রিক্সাওয়ালা ও রেল শ্রমিকসহ গুলিবিদ্ধ হয়ে ৮ জন শাহাদাত বরণ করেন। ঘটনার দিন বেলা ১১ টার সময় সমাবেশের আহবায়ক মাওলানা হোসাইন আহমদকে এসপি অফিসে ডেকে সমাবেশ বন্ধ করার জন্য চাপ দেয়া হয়। কিন্তু ইসলামী জনতা দলে দলে আসতে থাকে ঈদগাহ ময়দানের দিকে। উপায় না দেখে ঈদগাহ ময়দানে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। শুধুমাত্র দোয়া করে জনতাকে শান্ত করে চলে যাবো নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গের সেই আবেদনও শুনেনি ম্যাজিষ্ট্রেট ওয়াহিদুজ্জামান মোল্লা। এসময় ওয়াহিদুজ্জামান মোল্লা সেই সুযোগ দেয়া হবে না বলে গালিগালাজ করতে থাকে, ব্যাটা মৌলবাদীদের দেখে নেবো বলেও প্রকাশ্য হুমকি দেয়। এসময় ইসলামী জনতা বিক্ষোভে ফেটে পড়লে ম্যাজিষ্ট্রেট ওয়াহিদুজ্জামান মোল্লার নির্দেশে এলোপাতাড়ি গুলী বর্ষণ শুরু করে পুলিশ। পুলিশের গুলীতে প্রথমেই মাটিতে লুটিয়ে পড়ে ১০ম শ্রেণীর ছাত্র শিবির কর্মী আব্দুল মতিন। হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে। এ ঘটনায় শীষ মোহাম্মদ, রশিদুল হক, ৮ম শ্রেণীর ছাত্র সেলিম, সাহাবুদ্দীন, কৃষক আলতাফুর রহমান সবুর, রিক্সা চালক মোক্তার হোসেন ও রেল শ্রমিক নজরুল ইসলাম শহীদ হন। আহত হয় অর্ধ শতাধিক মানুষ। চাঁপাইনবাবগঞ্জের হাসপাতালে তিল ধারণের ঠাঁই না থাকায় আহতদের চিকিৎসার জন্য রাজশাহীতে পাঠানো হয়। ন্যক্কারজনকভাবে রাজশাহী নেয়ার পথেও আহতদের ওপর পুনরায় আক্রমণ চালানো হয়। বাড়ি বাড়ি তল্লাশির নামে হয়রানি করা হয়। নতুন করে পুলিশি নির্যাতনের পাশাপাশি মামলা দায়ের করা হয়। কুরআনের অবমাননাকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা যেখানে সকল মুসলমানের কর্তব্য সেখানে ইসলামী জনতার উপর গুলী বর্ষণ করে ইতিহাসের এক কালো অধ্যায় রচনা করেছিল বাংলাদেশের কিছু মুসলমান নামধারী পুলিশ। বর্বরোচিত হত্যাকান্ডের নিদের্শদাতা ম্যাজিষ্ট্রেট ওয়াহিদুজ্জামান মোল্লা এখন সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা। বর্বরোচিত এই হত্যাকান্ডের বিচারতো হয়ইনি, বরং উল্টো হয়রানি করা হয়েছিল মুসলিম জনতাকে।

ছবিঃ ওয়াহিদুজ্জামান মোল্লা

চাঁপাইনবাবগঞ্জবাসী পরদিন ১২ মে সকল বাধা উপেক্ষা করে কারফিউ ভেঙে জুমার নামাজের পর নৃশংস হত্যা বর্বরতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে শোককে শক্তিতে পরিণত করতে রাজপথে নেমে আসে । এ দিকে সারা বাংলাদেশে এমন নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানানো হয়। চাঁপাইনবাবগঞ্জের এমন ঘটনা সারা বিশ্বব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করে। ১৩ মে প্রশাসনের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে স্বতঃস্ফূর্ত হরতাল পালন করে চাঁপাইনবাবগঞ্জের কুরআনপ্রেমিক মানুষ। 

বাংলাদেশের এ ঘটনার ফলে সারা বিশ্বে একটি জনমত সৃষ্টি হয় এবং এর ফলশ্রুতিতে ভারত সরকার তটস্থ হয়ে হাইকোর্ট রায়টি প্রত্যাহারের নির্দেশ দিলে ১৩ ই মে মামলাটি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বি. সি বাসক বামনের আদালতে স্থানান্তরিত হয় এবং তিনি উক্ত মামলাটি খারিজ করে দেন। সেই থেকেই বাংলাদেশের ইসলামপ্রিয় জনগণ ১১ মে'র সেই দিনকে স্মরণ করে “কোরআন দিবস” হিসেবে পালন করে আসছে।

কুরআনের মর্যাদা রক্ষার সেই মহান সফল সংগ্রাম বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং সহযোগী ইসলামী ছাত্রশিবিরের দ্বারা সংঘটিত হয়েছিল। আর এখনো প্রধাণতঃ এদের দ্বারাই এই দিবসটি কোরআন দিবস হিসাবে পালিত হয়। এই দিবসটি দেশবাসীর কাছে আরো ভালোভাবে তুলে ধরতে হবে এবং সেই শাহাদাতের তামান্না নিয়ে আল-কোরআনকে বিজয়ী বিধান প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে এগিয়ে যেতে হবে। মহান আল্লাহ আমাদের তৌফিক দান করুন, আমিন। 

১১ মে ঐতিহাসিক কোরআন দিবস ।কোরআনের মর্যাদা ফিরিয়ে আনার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে  
১১ মে ঐতিহাসিক কুরআন দিবস নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র 


১৯৮৫ সালের ১১ মে’র ঘটনা জামায়াতে ইসলামীর ইতিহাসে কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, আল-কোরআনের মর্যাদা ও আধিপত্য প্রতিষ্ঠায় জামায়াতে ইসলামীর নিরবিচ্ছিন্ন সংগ্রামের একটি অংশমাত্র। এরজন্য জামায়াতে ইসলামী নীচের কাজগুলোসহ আরো কাজ অব্যাহত রেখেছে:
১) আল-কোরআন বুঝে আয়ত্ব করা তথা অধ্যয়নের জন্য ব্যাপকভাবে কোরআনের তাফসীর গ্রন্থ প্রচার ও প্রচলনের ব্যবস্থা করেছে। এই তাফসীর গ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে তাফহীমুল কোরআন, তাফসীর ফি জিলালিল কোরআন, তাফসীরে ইবনে কাসীর, তাফসীরে ওসমানী ইত্যাদি।
২) বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামী প্রথম তাফসীরুল কোরআন মাহফিল প্রচলন করে এবং দেশজুড়ে এর বিস্তার ঘটায়। অধিকন্তু এই তাফসীর মাহফিলের ভিডিও ক্যাসেট পৃথিবী জুড়ে ছড়িয়ে দেয়। পরে অন্যান্যরাও তাফসীর মাহফিল করে বর্তমানে। 
৩) বর্তমানে ফ্রী কোরআন শিক্ষার আন্দোলন জামায়াতে ইসলামী দেশজুড়ে ছড়িয়ে দিয়েছে। বর্তমানে মসজিদসহ বিভিন্ন স্থানে জামায়াতের সক্রিয় জনশক্তি একাজে নিয়োজিত হয়েছে। একে জামায়াত নিজ জনশক্তির ব্যক্তিগত কাজের অংশ করে দিয়েছে। 
৪) রাছুল (সাঃ) ও সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ) আল-কোরআনকে বিজয়ী বিধান হিসাবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিশ্বব্যাপী মরণপণ সংগ্রাম-আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে। অন্য ইসলামী শক্তি গুলো মুখে রাছুল ও সাহাবায়ে কেরামের ভক্তি দেখালেও রাছুল (সাঃ) ও সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ)-এর মূল কাজের বিষয়ে দুর্বল, কোন কোন সময় বিরোধীও। 

১১ মেতে আরেকটি স্মরণীয় ঐতিহাসিক ঘটনা: ১১ মে তারিখে ১৮৫৭ ঐতিহাসিক বৃটিশবিরোধী আজাদী আন্দোলনের সিপাহীরা দিল্লী অধিকার করেন এবং মোঘল সম্রাট বাহাদুর শাহকে সম্রাট ঘোষণা করেন।

Thursday, July 20, 2017

জামায়াত লক্ষ্যপানে কতদূর অগ্রসর হয়েছে? অধ্যাপক গোলাম আজমের সাক্ষাৎকার


জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের ৫০ বছর পূর্তিসংখ্যা (১৯৯১সাল) সোনার বাংলা পত্রিকায় এক সাক্ষাৎকারে আমীর জামায়াত অধ্যাপক গোলাম আজমকে প্রশ্ন করা হয়: 
জামায়াত তার আন্দোলনের পঞ্চাশ বছর পূর্ণ করেছে। পথহারা মুসলিম জাতিকে ইসলামের সুমহান লক্ষ্যপানে ধাবিত করাই জামায়াতে ইসলামীর বুনিয়াদি লক্ষ্য। খোলাফায়ে রাশেদার আদর্শের আলোকে খেলাফত আলা মিনহাজিন্নাবুয়াত এই (নবীর তরীকা মোতাবেক খেলাফত) জামায়াত প্রতিষ্ঠা করতে চায়। জামায়াত সেই লক্ষ্যপানে কতদূর অগ্রসর হয়েছে বলে আপনি মনে করেন?

এর উত্তরে তিনি বলেন: আসল কথা হলো ইসলাম যে একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান। এর দ্বারা রাজনীতি, অর্থনীতি তথা জীবনের সব সমস্যার সমাধান হতে পারে এ কনসেপ্ট মুসলিম সমাজ থেকে উবে গিয়েছিল।

বালাকোটের ময়দানে ইসলামী আন্দোলন ১৮৩১ সালে পরাজিত হবার পর সে আন্দোলন আর দানা বাধতে পারেনি। সাইয়েদ আহমদ শহীদের নেতৃত্বে সে আন্দোলন উপমহাদেশের উত্তর সীমান্ত প্রদেশ ও পাঞ্জাবের কিছু এলাকা নিয়ে একটি ইসলামী রাষ্ট্র গঠন করে। কিন্তু শিখ ও ইংরেজদের মিলিত ষড়যন্তের ফলে বালাকোটের ময়দানে পরাজয় ঘটে ইসলামের। এর ১০০ বছর পর প্রতিষ্ঠা লাভ করে জামায়াতে ইসলামী। এই পঞ্চাশ বছরে জামায়াতে ইসলামীর সবচেয়ে বড় অবদান হচ্ছে যে দলটির আন্দোলন ও সংগ্রামের ফলে ইসলাম একটি পূর্নাঙ্গ জীবন বিধান এই কনসেপ্টটি মুসলিম সামজে আবার প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। কয়েকশ বছর পর্যন্ত মুসলমানদের দিল-দেমাগ থেকে ইসলামের ধারণাই সরিয়ে ফেলা হয়েছিল, কিন্তু আলেম সমাজ ও মাদ্রাসাসমূহের ইহা এক বিরাট আবদান তারা কুরআন হাদীসকে সমাজের মাঝে জাগরূক রেখেছে। তাদের এ অবদান স্বীকার করতেই হবে।

কিন্তু কোরআন-হাদীরের জ্ঞান থাকার পরও আলেম সমাজ ইসলামকে একটি দ্বীন তথা জীবনাদর্শ হিসাবে তুলে ধরতে পারেনি। আমি বলব তাদের সামর্থ ছিল না। তাই তারা মুসলিমলীগ ও কংগ্রেস এ দুই ভাগে বিভক্ত ছিলেন। দেওবন্দী হবার পরও মাওলানা শাব্বির আহমদ ওসমানীর নেতৃত্বে ১০৪৩ সালে আলেমগন জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম গঠন করেন যা পরবর্তীতে পাকিস্তান আন্দোলন সমর্থন দান করে।

মাওলানা মওদূদী এটা এক বিশেষ অবদান এমতো পরিস্থিতিতেও তিনি এমন এক আন্দোলন গড়ে তুলেন যা আজ বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত। ইউরোপ, আমেরিকা থেকে জাপান যেখানেই উপমহাদেশের মুসলমান রয়েছে সেখানেই এ আন্দোলন বিস্তার রয়েছে।

আজ আধুনিক শিক্ষিতদের মধ্যে একটি বড় দল তৈরী হয়ে গেছে যারা নিজেদের মুসলিম বলে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করে। অথচ আজ থেকে ৫০ বছর আগে এ অবস্থা ছিল না। এ আন্দোলন ইসলামের জন্য জীবন উৎসর্গ করতে উদ্বুদ্ধ করেছে লাখ লাখ নওজোয়ান নারী-পুরুষ-বৃদ্ধকে। মাদ্রাসার পাঠ চুকিয়ে যারা মনে করতেন দ্বীনের দায়িত্ব আঞ্জাম হয়ে গেছে বা যাবে এ আন্দোলন তাদের ধারনা পাল্টে দিয়েছে। ইকামাতের দ্বীনের কুরআনী জযবায় আলোড়িত করে তুলেছে ওলামা সমাজকে।

যে সমস্ত দলের তত্ত্বে ইসলাম নেই, তারাও আজ ইসলামের ঝান্ডা আর আল্লাহু আকবার শ্লোগান দিয়ে নেমে এসেছে। নেজাম মানে বিধান নিয়ম নীতি রীতি। ১৯৫৩ সালে গঠিত হয় নেজামে ইসলাম। তাদের লক্ষ্য ইসলাম প্রতিষ্ঠা। ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠা লাভ করে খেলাফত আন্দোলন। ৪০ বছর পর্যন্ত রাজনীতিকে দ্বীনের অংশ মনে করতেন না হাফেজী হুজুর। তিনি ইসলাম কায়েমের জন্য ময়দানে নেমে আসেন জীবনের শেষ প্রান্তে। রাজনীতিকে বেছে নেনে পথ হিসাবে, যারা নাকি রাজনীতিকে দ্বীনের কাজই মনে করতেন না তাদেরকে এ আন্দোলনই শিখিয়েছে যে, ইসলাম প্রতিষ্ঠার আন্দোলন ও দ্বীনের কাজ। আশির দশকে এ অঞ্চলে আরও একটি দল কায়েম হয়েছে ইসলাম প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য নিয়ে।

এভাবে আমি বলতে চাই-জামায়াতে ইসলামী এর লক্ষ্যে অনেক অগ্রসর হয়েছে এবং জামায়াতে এখন আল্লাহর রহমতে এমন একটি পরিবেশ সৃষ্টিতে সক্ষম হয়েছে যে কেউ জামায়াতে করুক না নাই করুক এমনকি জামায়াতের বিরোধিতা করলেও কুরআনের আইনের কথা বলতে বাধ্য হচ্ছে।




Wednesday, February 22, 2017

খোলা চোখে বাংলাদেশের জন্য জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের অবদান

লিখেছেন: সঠিক ইসলাম, মাধ্যমে: লোকমান বিন ইউসুফ date: June 18, 2014

খোলা চোখে বাংলাদেশের জন্য জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের অবদান:

১.পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে রাজনৈতিকভাবে সচেতন করে দেশের একনিষ্ঠ লড়াকু কর্মী হিসেবে গড়ে তোলাঃ
১৭৫৭ সালে অধিপত্যবাদী ব্রিটিশরা ভারতীয় উপমহাদেশ দখল করে নেয়ার সাথে সাথে প্রশাসনিক ও অফিসিয়াল ভাষা হিসেবে ইংরেজী চালু করার কারনে আরবী, ফারসী, উর্দু ভাষা জানা হাজার হাজার আলেম (মাওলানা)প্রশাসনিক কাজের যোগ্যতা হারান ইংরেজী না জানার কারনে। তিনটি ভাষা পারা স্কলারগন হয়ে গেলেন অপাঙ্থেয়। তারা অহমিকা , আত্বসম্মানবোধ , দুরদৃষ্টির অভাবে ইংরেজী শিক্ষাকে হারাম বললেন। আর পিছিয়ে পড়লেন ৩০০ বছরের জন্য। তিনটি ভাষা রপ্ত করার মত যোগ্যতা সম্পন্নরা হয়ে গেলেন সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগন। জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবির এই পিছিয়ে পড়া মানুষগুলোকে রাজনৈতিকভাবে সচেতন করে দেশের একনিষ্ঠ লড়াকু কর্মী হিসেবে পুনরায় গড়ে তোলে ব্রিটিশ পরাধীনতার গিনিপিগের দায় থেকে মুক্ত করেছে বাঙ্গালী জাতিকে।

২.ক্ষমতায় না গিয়ে কর্মসংস্থান তৈরী ও চুড়ান্ত সফলতা অর্জনঃ
বাংলাদেশে অন্যতম রাজনৈতিক দলগুলো ইতিমধ্যে ক্ষমতার স্বাদ গ্রহন করেছে। বাংলাদেশের ডেভেলাপমেন্টের জন্য মৌলিক কি কাজ করেছে ? অথচ জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবির এদেশে অসংখ্য প্রতিষ্ঠান গডে তুলেছে। স্কুল ,কলেজ,মাদরাসা , বিশ্ববিদ্যালয়, ব্যাংক, বীমা , হাসপাতাল, দাতব্য প্রতিষ্ঠান,এনজিও, মাইক্রোফিন্যান্স , মাল্টিপারপাস, ফার্মাসিউটিক্যালস, রিয়েলস্টেট কোম্পানী, শিপিং কোম্পানী, ট্রান্সপোর্টে বিনিয়োগ , টিভি চ্যানেল , সংবাদপত্র সহ অসংখ্য প্রতিষ্ঠান ও কর্মসংস্থান তৈরী করেছে। যা বাংলাদেশের ডেভেলেপমেন্টে সুনাম ও সফলতার সাথে কাজ করছে। ইসলামী ব্যাংক আজ ব্যাংক জগতের শীর্ষে অবস্থান করছে।

৩. করাপশান ফ্রি (দুর্নীতি মুক্ত) পেশাদারী প্রতিষ্ঠান তৈরীঃ
জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের ব্রেইন চাইল্ড ইসলামী ব্যাংক ১০০% করাপশান ফ্রি পেশাদারী প্রতিষ্ঠান। এখানে ইনভেস্টমেন্ট নীতে ঘুষ দিতে হয়না । কর্মকর্তা কর্মচারীরা ১০০% সৎ। বাংলাদেশে এমন করাপশান ফ্রি পেশাদারী প্রতিষ্ঠান কে তৈরী করতে পেরেছে। করাপশান ফ্রি পেশাদারী প্রতিষ্ঠান হওয়ার কারনে এই মাসে টোটাল ফরেন রেমিটেন্সের ৩৮ % ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে। মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসীরা ইসলামী ব্যাংককে চরম বিশ্বাস করে ও ইসলামী ব্যাংক সফলতার সাথে সেই আস্থা ধরে রেখে দেশের সেবা দিয়ে যাচ্ছে। ইসলামী ডেভেলেপমেন্ট ব্যাংক(আইডিবি) এর মত প্রতিষ্ঠান ও ইসলামী ব্যাংক এর সাথে বেশী কাজ করতে ইচ্ছুক যে ব্যাংকটি জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের বলে আওয়ামীলীগ প্রায় চিৎকার করে উঠে।

৪. ইসলামী অর্থনীতি ও ইসলামী ব্যাংকিং জামায়াতে ইসলামীর ব্রেইন চাইল্ডঃ
ইসলামী ব্যাংকিং ও ইসলামী অর্থনীতি জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের ব্রেইন চাইল্ড। এই মডেল ওআইসিভূক্ত অনেক ইসলামী দেশে চলছে। সম্প্রতি নাইজেরিয়া সরকারী ভাবে আইডিবির পরামর্শে ইসলামী ব্যাংক থেকে একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কর্মকর্তা হায়ার করেছে সে দেশে ইসলামী ব্যাংকিং চালু করার জন্য। সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী (রঃ) ও মাওলানা আবদুর রহীমের অনবদ্য গবেষনায় এটি সম্ভব হয়েছে। বাংলাদেশে ৭ টি র্পূনাঙ্গ ইসলামী ব্যাংক রয়েছে যা জামায়াত নেতাদেরই চিন্তার সাফল্য। প্রপিট লস শেয়ারিং মেথড পুরোবিশ্বের অর্থনীতির জন্য ত্রানকর্তা বিবেচিত হবে অচিরেই।

৫.তত্তাবধায়ক সরকারের র্ফমূলা দেয়াঃ
একটি মাইক্রো ক্রেডিটের আইডিয়া দিয়ে ও বাস্তবায়ন করে ডঃ ইউনুস সাহেব বাংলাদেশকে নোবেল প্রাইজ এনে দিয়েছে। ইউনুস সাহেবের যেমন হিলারীরা বন্ধু ঠিক তেমনি অধ্যাপক গোলাম আযম সাহেবেরও যদি পশ্চিমা বন্ধু থাকত তবে তত্তাবধায়ক সরকারের র্ফমূলা দেয়ার জন্য শান্তিতে আরেকটি নোবেল বাংলাদেশ পেত। রাষ্টবিজ্ঞানে অনন্য সংযোজন তত্তাবধায়ক সরকারের র্ফমূলা। ১৯৯১ সালে বাংলাদেশের দুর্যোগপূর্ন রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এটি দারুন কার্যকরী হয়েছে। তত্তাবধায়ক সরকারের র্ফমূলার আবেদন এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশে তীব্রভাবে বিদ্যামান। পৃথিবীর সকল দুর্বল গনতন্ত্রী দেশে তত্তাবধায়ক সরকারের র্ফমূলা আশার পথ দেখাবে অনেক দিন ধরে।

৬.আধিপত্যবাদ বিরোধী জনশক্তি তৈরীঃ
সরকার পরিবর্তন হলে আওয়ামীলীগের সোনার ছেলেদেরকে (ছাত্রলীগ/যুবলীগ) ক্ষমতায় থাকাকালীন করা অপকর্মের কারনে জনরোষের ভয়ে বাংলাদেশের রাস্তাঘাটে দেখা যায়না । জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা পৃথিবীর ইতিহাসের স্মরকালের ভয়াবহতম নির্যাতন উপেক্ষা করে রাজনৈতিক ময়দানে তীব্রভাবে সক্রিয়। সকল আধিপত্যবাদ বিরোধী আন্দোলনে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের অবদান রয়েছে। ৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন ও ৯৬ তত্তাবধায়ক সরকারের জন্য আন্দোলন সহ আধিপত্যবাদী ভারত ও আমেরিকা বিরোধী আন্দোলনে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের ভূমিকা আছে। আধিপত্যবাদ বিরোধী নয় বিধায় আওয়ামীলীগকে দেশপ্রেমিক জনগন একদমই বিশ্বাস করেনা।

৭. আক্ষরিক স্বাধীনতার পরিবর্তে মানসিক স্বাধীনতার উপর গুরুত্বারোপ ও জন সেন্টিমেন্ট তৈরীঃ
জামায়াত ইসলামীকে নিয়ে একটি অভিযোগ হচ্ছে তারা ১৯৭১ এ স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল। এই অভিযোগের উত্তরে জামায়াতে ইসলামীর উত্তর হচ্ছে "তারা ভারতীয় আধিপত্যবাদের ভয়ে পাকিস্তান ভাগ হয়ে যাক চাননি" ।
আজকের বাস্তবতায় বাংলাদেশের জনগনকে যদি প্রশ্ন করা হয়
ক. ভারতীয় পন্য ছাড়া চলতে পারবে বাংলাদেশ?
খ. ভারতীয় টিভি চ্যানেল ও সিনেমা ছাড়া চলতে পারবে বাংলাদেশ?
গ. ভারতের সাথে বানিজ্য ঘাটতি সহনীয় পর্যায়ে আনতে পারবে বাংলাদেশ ?
ঘ.ভারতের সাথে সামরিক শক্তিতে পারবে বাংলাদেশ?
ঙ.বন্ধুত্বপূর্ন সম্পর্ক ও অবস্থান বাংলাদেশের সাথে ভারতের হবে কি?
এই প্রশ্নগুলোর উত্তরে
বেশিরভাগ জনগনের উত্তর হবে না।
ক. ভারতীয় পন্য ছাড়া চলতে পারবে বাংলাদেশ?
খ. ভারতীয় টিভি চ্যানেল ও সিনেমা ছাড়া চলতে পারবে বাংলাদেশ?
গ.ভারতের সাথে বানিজ্য ঘাটতি সহনীয় পর্যায়ে আনতে পারবে বাংলাদেশ ?
এই তিনটি প্রশ্নের উত্তর যদি জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের কাছে আপনি খুজেন তারা বলবে অবশ্যই পারবে বাংলাদেশ । ভারতীয় পন্য ছাড়া চলতে পারবে বাংলাদেশ।
ভারতীয় টিভি চ্যানেল ও সিনেমা ছাড়া চলতে পারবে বাংলাদেশ।
ভারতের সাথে বানিজ্য ঘাটতি সহনীয় পর্যায়ে আনতে পারবে বাংলাদেশ । না পারলে প্রাচ্যমুখী বানিজ্যনীতি শুরু করতে হবে।
ঘ.ভারতের সাথে সামরিক শক্তিতে পারবে বাংলাদেশ?
ঙ.বন্ধুত্বপূর্ন সম্পর্ক ও অবস্থান বাংলাদেশের সাথে ভারতের হবে কি?
এই দুটি প্রশ্ন যদি জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরকে করা হয় তারা উত্তরে বলবে আল্লাহর উপর ভরসা ও দেশপ্রেমিক জনতার সহযোগিতায় আমরা স্বাধীন স্বত্তা নিয়ে বেচে থাকতে চাই। আর এটা প্রমানিত সত্য যে এদেশের মানুষকে যুদ্ধ করে পরাস্ত করার ইতিহাস খুবই কম আছে।
মানসিক ভাবে যদি বন্দী থাকেন তবে কখনোই আপনি স্বাধীন হতে পারবেন না। আগে আপনাকে বিশ্বাস করতে হবে "ইউ কেইন" আপনি পারবেন। তবেই আপনি পারবেন। জামায়াতে ইসলামী ছাড়া বাংলাদেশের অন্য কেহ বিশ্বাস করেনা এখন স্বাধীন পররাষ্টনীতির কথা । আক্ষরিক স্বাধীনতার পরিবর্তে মানসিক স্বাধীনতার উপর জামায়াতে ইসলামী গুরুত্বারোপ করেছে ও জন সেন্টিমেন্ট তৈরী করেছে।

৮.নৈতিক চরিত্র বিকাশ সাধনের জন্য প্রচুর পরিমান সাহিত্য তৈরী ও অনুবাদঃ
জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবির ও তার চিন্তাভাবনার জনশক্তিরা নৈতিক চরিত্র বিকাশ সাধনের জন্য প্রচুর পরিমান সাহিত্য রচনা করেছে ও বিদেশী সাহিত্য অনুবাদ করেছে।

৯.কবি কাজী নজরুল ইসলাম ও কবি ফররুখ এর পর প্রচুর পরিমান ইসলামী গান তৈরীঃ
আজ অসংখ্য নতুন ইসলামী গান আপনি শুনতে পান । কখনো কি মনে প্রশ্ন জেগেছে এর লেখক , সুরকার এবং প্রকাশক কারা? জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবির ও তার চিন্তাভাবনার জনশক্তিরা কবি কাজী নজরুল ইসলাম ও কবি ফররুখ এর পর প্রচুর পরিমান ইসলামী গান দেশের জনগনের খেদমতে পেশ করেছে।

দেশগঠনঃ
১. সংগঠন ও দেশ পরিচালনায় একসাথে সকল জনশক্তির মগজ ব্যবহারের ব্যতিক্রম মডেল উপস্থাপনঃ আওয়ামীলীগ , বিএনপি ক্ষমতায় যায় । তাদের সকল স্তরের জনশক্তি কি দেশ পরিচালনার সুযোগ পায়? অথবা দল পরিচালনার ক্ষেত্রে তারা কি সকল জনশক্তির মগজ ব্যবহারে সক্ষম? কিন্তু জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবির পরামর্শ ব্যবস্থা রেখে দল পরিচালনায় অনন্য সক্ষমতায় ও সফলতার সাথে প্রত্যকটি জনশক্তির ব্রেইনকে দল ও দেশের জন্য ব্যবহার করছে । একজন তৃনমুল পর্যায়ের কর্মী দলের ও দেশের জন্য কি চিন্তা করছেন ম্যাক্সিমাম এক মাসের মধ্যে দলীয় প্রধানের নিকট রিপোর্ট আকারে মুলবক্তব্যটি পৌছে যায়। এছাড়া কোন সমর্থক কর্মী ইচ্ছা করলে লিখিত বা ফোন করে পরামর্শ যেকোন স্তরের নেতাকে পৌছাতে পারে। দেশ পরিচালনায় এমন সিস্টেম চালু করা গেলে দেশের চেহারা অসম্ভব দ্রুত গতিতে পাল্টাবে তা নিশ্চিত করেই বলা যায়।

২.প্রচুর পরিমান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা , আদর্শ ও দক্ষ শিক্ষক সমাজ তৈরীঃ
পৃথিবীকে গড়তে হলে সবার আগে নিজেকে গড়। এই মূল মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ হয়ে মেধাভিত্তিক দলীয় কর্মকান্ড পরিচালনার জন্য জামায়াত ১০০% শিক্ষিত নেতাকর্মী তৈরী করেছে। যার অধিকাংশ নেতাকর্মীরা উচ্চ শিক্ষিত। শুধু তাই নয় প্রচুর পরিমানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা , আদর্শ ও দক্ষ শিক্ষক সমাজ তৈরী করেছে। যার সামান্য অবস্থান জামায়াতে ইসলামী বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এর শিক্ষক সমিতি নির্বাচনে জয়লাভের মাধ্যমে অবস্থানের জানান দেয়।

৩. সমাজের নৈতিক মোটিভেশনের লক্ষ্যে বাকশক্তি সম্পন্ন অসংখ্য সাহসী ইমাম তৈরী করেছে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবির।

৪. লেখক ও সংস্কৃতি কর্মী তৈরী করেছে। রমজানের সময় বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের ইসলামী অনুষ্ঠান ও টকশো তার প্রমান বহন করে।

৫.জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবির এদেশে দেশপ্রেমিক প্রশাসনিক অফিসার তৈরী করেছে । যারা প্রশাসনের ভিতরে সৎ ও দেশপ্রেমিক হিসেবে পরিচিত। সাবেক এক স্বরাষ্ট সচিব ও ফেনীর সাবেক এক ডিসির কথা অনেকেরই মনে থাকার কথা।

৬. জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবির ও তার চিন্তাভাবনার জনশক্তিরা এদেশে অসংখ্য হাসপাতাল,ক্লিনিক, দাতব্য প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছে।

৭. সর্বপর্যায়ের জনশক্তিকে কার্যকরভাবে অধ্যয়নমুখী করা , ক্যরিয়ার সচেতনতা তৈরী , নিজ দরীয় নেতাকর্মীদের উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখাতে পারা ও দেশ গঠনের কাজে লাগিয়ে দেয়া জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবির এর অন্যতম অবদান। এক রেটিনা (মেডিকেল ভর্তি কোচিং) দিয়েই তো প্রচুর মেধা সম্পন্ন ছাত্রছাত্রীদের তৈরী করে সরকারী মেডিকেলে সাপ্লাই দিয়েছে ছাত্রশিবির । খ্রিষ্টান মিশনারী শিক্ষাপ্রতিষ্টানের পাশাপাশি শিক্ষাক্ষেত্রে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবির ও তার চিন্তাভাবনার জনশক্তিদের অবদান সুবিধাভোগীরা কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরন করবে।

দলীয় ও রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তনে ভূমিকাঃ
১ .জামায়াতে ইসলামী , ছাত্রশিবির ও তার চিন্তাভাবনার জনশক্তিরা বাংলাদেশে দলীয় কোন্দল মুক্ত সহনশীল রাজনৈতিক সংস্কৃতি চালু করেছে । বাংলাদেশে বিদ্যামান অন্য দলগুলোতে খুনোখুনি পর্যায়ের দলীয় কোন্দল।

২.জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবির তাদের দলীয় পরিবেশে অনুকরনীয় গনতন্ত্র চর্চা করে । বিএনপি ও আওয়ামীলীগে যা নেই।

৩. ১০০% ধুমপানমুক্ত সংগঠন জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবির। যা বাংলাদেশের অন্য রাজনৈতিক সংগঠনগুলো কল্পনা করতে পারেন।

৪. তৃনমূল পর্যায় থেকে নেতা তৈরী ও বাছাই করে সর্বোচ্চ পর্যায়ে দায়িত্বপালনের সুযোগ প্রদান জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবির । অন্য দলের নেতা কমীরা তা স্বপ্নে ভাবেন মাত্র।

৫. দলের নেতাদের প্রতি কর্মীদের আস্থা রয়েছে অগাধ। এই দলটি সৎ জনশক্তি তৈরী করতে পেরেছে ও সৎ জনশক্তিগন জনগনের আস্থা অর্জন করেছে। যার কারনে গত ব্যাংকিং বছরে ইসলামী ব্যাংক ৩২ % ফরেন রেমিটেন্স সংগ্রহ করতে পেরেছে। আর কে না জানে এই ব্যাংকে জামায়াতে ইসলামী , ছাত্রশিবির ও তার চিন্তাভাবনার জনশক্তিরা আছেন।
বাংলাদেশে যদি আওয়ামীলীগের তৃনমুল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের আপনি প্রশ্ন করেন তাদের নেতারা কেমন? উত্তরে তারা বলবে "সব ধান্ধাবাজ , চোর ও পেট লীগ" । আর জামায়াতে ইসলামীর সকল সমর্থককে আপনি প্রশ্ন করে দেখেন যে "সাঈদী হুজুর কেমন?" উত্তরে তারা সবাই বলবে উনি খুবই ভাল লোক। কাছের মানুষের সাক্ষ্যই মানুষের ভাল হওয়ার প্রমান বহন করে। তাই নয় কি?

৬.জামায়াতে ইসলামী , ছাত্রশিবির কর্মীদের চাদাঁয় দল পরিচালনা করেন। এমন ত্যাগী মন মানসিকতার নেতাকর্মী তৈরী অন্যরা শুধু স্বপ্নে দেখে চমকে উঠবেন মাত্র।
Source: www.onbangladesh.org

Thursday, January 12, 2017

সরকারী ক্ষমতায় সীমিত সামর্থ নিয়ে জামায়াতের সাফল্য



> বিগত পাঁচ বছর চারদলীয় জোট সরকারে অংশগ্রহণ করে জামায়াতের দুইজন মন্ত্রী দেশবাসীর সামনে প্রমাণ করে দিয়েছেন যে, সকল প্রকার দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও অন্যায়-অবিচার হতে সম্পূর্ণ মুক্ত থেকে দক্ষ ও যোগ্যতার সাথে সরকার পরিচালনা করা সম্ভব। বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দুর্নীতি বিরোধী অভিযানে জামায়াতের দুই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে তাদের মন্ত্রণালয়ে কোন দুর্নীতির প্রমাণ না পাওয়া তার বড় প্রমাণ।


> জামায়াতের এমপিগণ জাতীয় সংসদে ভূমিকা পালনের সাথে সাথে নিজ নিজ এলাকার উন্নয়নে নিষ্ঠা ও সততার সাথে কাজ করে জনগণের মধ্যে এক নবজাগরণ সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছেন।


> জামায়াতের আমীর কৃষি মন্ত্রী থাকাকালে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষ্যে সচিবালয় থেকে শুরু করে গ্রাম পর্যন্ত কৃষি সেক্টরে ব্যাপক গতি সঞ্চার করা হয়।

> রফতানিযোগ্য কৃষি পণ্যের উৎপাদন ব্যাপক বৃদ্ধি করা হয়।

> দারিদ্র্য বিমোচন ও কৃষকের ক্ষমতায়নের জন্য “চাষীর বাড়ি-বাগান বাড়ি” প্রকল্প চালু করা হয়।
> সহজে পণ্য বিক্রয়ের জন্য কমিউনিটি মার্কেট প্রতিষ্ঠা করা হয়।

> বৃক্ষরোপন অভিযানের সাথে ফলজ গাছের রোপণ অন্তর্ভুক্ত করে ফল চাষের নতুন অধ্যায়ের সূচনা করা হয়। দেশীয় ফলের উৎপাদন প্রায় দ্বিগুন হয়।
> প্রশাসনিক ক্ষেত্রে সকল গবেষণা প্রতিষ্ঠানে চলতি দায়িত্বের স্থলে পূর্ণকালীন মহাপরিচালক নিয়োগ করা হয়।
> মাঠ পর্যায়ের প্রায় ১২০০০ ব্লক সুপারভাইজারদের পদ আপগ্রেড করে উপ-সহকারী কৃষি অফিসার পদে পদায়ন করা হয়- যুগান্তকারী এ পদক্ষেপের ফলে কৃষি উন্নয়নে তাদের আগ্রহ ও নিষ্ঠা বৃদ্ধি পায়।

> দেশে দ্রুত শিল্পায়ন, বেকারত্ব দূরীকরণ, কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি, দেশব্যাপী ক্ষুদ্র ও মাঝারি (এসএমই) শিল্পের ব্যাপক প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে শিল্প নীতি-২০০৫ এবং এসএমই উন্নয়ননীতি কৌশল-২০০৫ প্রণয়ন করা হয়।

> দারিদ্র্য বিমোচন, কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারা আরো বেগবান করার জন্য স্মল এন্ড মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজ (এসএমই) ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করা হয়।
> বিএসটিআই’র আধুনিকায়ন, ন্যাশনাল এ্যাক্রিডিটেশন বোর্ড গঠন, পেটেন্ট অফিস এবং ট্রেডমার্ক রেজিষ্ট্রি অফিসকে একীভূত করে পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর গঠন, বিএসটিআই’র আধুনিকায়ন করা হয়।

> বন্ধ শিল্প যেমন কর্ণফুলী পেপার মিলস লিঃ (কেপিএম)-এর কস্টিক ক্লোরিন প্লান্ট ও খুলনা হার্ডবোর্ড মিল পুনঃচালু করা হয়।

> ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে মহিলাদের কর্মসংস্থান ও সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে জাতীয়ভাবে শিল্পোদ্যোক্তা ফোরাম গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।

> সফল সার ব্যবস্থাপনা, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পখাতের উন্নয়ন, মানব সম্পদ উন্নয়নের জন্য ন্যাশনাল প্রোডাকটিভিটি অর্গানাইজেশনের আধুনিকায়ন করা হয়।

> লবন উৎপাদন দ্বিগুন হয়। চিনি শিল্পে প্রথম দু’বছরের প্রচেষ্টায় ১২ বছর ধরে চলা লোকসান বন্ধ হয় এবং ৩য় বছরের শেষে লাভজনক শিল্পে পরিণত হয়।
> এ সময়ে শিল্পখাতের প্রবৃদ্ধির হার অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে যায়।

> এছাড়াও কৃষি ও শিল্প সেক্টরে অনেক উন্নয়ন কর্মসূচী গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হয়, ফলে দেশের ব্যাপক অর্থনৈতিক উন্নয়ন অর্জিত হয়।

> জামায়াতের সেক্রেটারী জেনারেল সমাজ কল্যাণ মন্ত্রী থাকাকালে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক দারিদ্র্য বিমোচন ও মানব সম্পদ উন্নয়নের লক্ষ্যে ঋণ, অনুদান, আয়বর্ধক, প্রশিক্ষণ, ইত্যাদি কর্মসূচী গ্রহণ ও সম্প্রসারণ করা হয়।
> উপরোক্ত কর্মসূচী বাস্তবায়নের জন্য বাজেট প্রায় ৪ গুণ বৃদ্ধি করা হয় ।

> বয়স্ক ভাতাভোগীদের সংখ্যা ৪ লক্ষ থেকে বৃদ্ধি করে ১৭ লক্ষে উন্নীত করা এবং ভাতা বৃদ্ধিসহ বাজেট প্রায় ৮ গুণ বৃদ্ধি করা হয়।

> গরীব-দুস্থ-অসহায় ব্যক্তিদের জটিল রোগের চিকিৎসার জন্য ডায়াবেটিক হাসপাতাল, হার্ট ফাউন্ডেশন ও অন্যান্য হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা ও সম্প্রসারণ করা হয়।

> প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উন্নয়ন ও কল্যাণে ৮ দফা স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়।

> প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য ভাতা ও বিনাসুদে ঋণ প্রদান এবং প্রতিবন্ধী ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা সম্প্রসারণের জন্য ছাত্রবৃত্তি প্রদানের স্থায়ী নিয়ম চালু করা হয়।

> প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের আয়বর্ধক কমসূচী যেমন, মিনারেল ওয়াটার উৎপাদন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা ও বিপণন ব্যবস্থা চালু করা এবং প্লাষ্টিক দ্রব্যের উৎপাদন ও বিপণন ব্যবস্থা সম্প্রসারণ করা হয়।

রচনাকাল: ৫ মার্চ ২০১২, সোমবার

Popular Posts