আমি ফেইসবুকে একটা ভিডিও পোষ্ট দিয়েছিলাম। সেখানে কমেন্টে প্রফেসার গোলাম আজমের শাহাদাত সংক্রান্ত একটা পর্যালোচনা হয়েছে । আলোচনাটি আকর্ষনীয় হওয়ায় এখানে পোষ্ট আকারে সাজিয়ে দিলাম:
Shahadatur Rahman Sohel:
শহীদ প্রফেসর গোলাম আযম সাহেবের শেষ ইন্টারভিউ. তার গ্রেফতার প্রসঙ্গেঃ 'জীবনে বহুবার গ্রেফতার হয়েছি আর মুমিনতো মৃত্যুকে পরোয়া করেনা, আর যদি অন্যায় ভাবে মৃত্যু দেয়া হয় তাহলে শহীদ হওয়ার গৌরব পাওয়া যায় সে হিসেবে ইসলামী আন্দোলনের কর্মি হিসেবে শাহাদাত কামনা করি। সেজন্য ভয় কিসের? আল্লাহকে ছাড়া কাউকে ভয় করা তো জায়েজই না, আল্লাহ কে ছাড়া কাউকে ভয় করার অনুমতি নাই'
শহীদ প্রফেসর গোলাম আযম সাহেবের শেষ ইন্টারভিউ. তার গ্রেফতার প্রসঙ্গেঃ 'জীবনে বহুবার গ্রেফতার হয়েছি আর মুমিনতো মৃত্যুকে পরোয়া করেনা, আর যদি অন্যায় ভাবে মৃত্যু দেয়া হয় তাহলে শহীদ হওয়ার গৌরব পাওয়া যায় সে হিসেবে ইসলামী আন্দোলনের কর্মি হিসেবে শাহাদাত কামনা করি। সেজন্য ভয় কিসের? আল্লাহকে ছাড়া কাউকে ভয় করা তো জায়েজই না, আল্লাহ কে ছাড়া কাউকে ভয় করার অনুমতি নাই'
S.m. Hasan:
শহীদ প্রফেসর গোলাম আযম ?? শহীদ ?? how, why?
#ShahadaturRahmanSohel answer me please
Shahadatur Rahman Sohel:
আমরা হাদীস থেকে জানি- যারা সত্যিকার শাহাদাত কামনা করবে তারা বিছানায় শুয়ে মৃত্যুবরণ করলেও শহীদ হবে। প্রফেসর গোলাম আযম সাহেবের সমস্ত জীবন সাক্ষী দেয় তার শাহাদাত কামনা সত্যিকারের ছিল। তাছাড়া জালিমের কারাগারের হয়রানী সহ্য করে মৃত্যুবরণ করেও তিনি শহীদ হিসাবে গণ্য হবেন না -এটা তো আমার কাছে আশ্চর্যজনক মনে হয়। আমি মনে করি- অবশ্যই তিনি শহীদ। কেউ ভিন্নমত পোষণ করতে পারেন। হে আল্লাহ! প্রফেসর গোলাম আযমকে উচ্চপর্যায়ের শাহাদাত দান কর এবং জান্নাতুল ফিরদৌস নসীব কর, আমীন।
Abu Sayeed:
"যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি ঈমান এনেছে তারাই তাদের রবের কাছে ‘সিদ্দীক’ ও ‘শহীদ’ বলে গণ্য৷ তাদের জন্য তাদের পুরস্কার ও ‘নূর’ রয়েছে" (সুরা হাদীদ: ১৯ নং আঃ)৷ হাদীসে হযরত বারা ইবনে আযেব বর্ণনা করেছে যে, তিনি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে একথা বলতে শুনেছেন যে, "আমার উম্মতের মু'মিনগণই শহীদ। " তারপর নবী (সা) সূরা হাদীদের এ আয়াতটি তেলাওয়াত করলেন (ইবনে জারীর)৷ ইবনে মারদুইয়া হযরত আবুদ দারদা থেকে এই একই অর্থের একটি হাদীস উদ্ধৃত করেছেন যে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ "যে ব্যক্তি তার প্রাণ ও দীন বিপন্ন হবে ও কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হবে এ আশংকায় কোন দেশ বা ভূ-খণ্ড ছেড়ে চলে যায় তাকে আল্লাহর কাছে 'সিদ্দীক'বলে লেখা হয়। আর সে যখন মারা যায় তখণ আল্লাহ শহীদ হিসেবে তার রূহ কবজ করেন। একথা বলার পর নবী (সা) এ আয়াতটি তেলাওয়াত করলেন৷
অধ্যাপক গোলাম আযমের চতুর্থ ছেলে সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহিল আমান আযমী তাঁর পিতাকে আল্লাহ যাতে শহীদ হিসাবে কবুল করেন এজন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন। একজন মুসলমান নামাজ পড়ে না্মাজ কবুলের জন্য দোয়া করে। তেমনি একজন শহীদ ব্যক্তিরই শাহাদাত কবুলের জন্য দোয়া করা হয়। মহান আল্লাহ অধ্যাপক গোলাম আযমকে সর্বোচ্চ পর্যায়ের শহীদ হিসাবে কবুল করুন, আমীন
একদিন লেখিকা মাসুদা সুলতানা রুমী আপার বাসায় গেলে তার লেখা একটি পান্ডুলিপি চোখে পড়ে। নাম দিয়েছেন ''মরনের আগে ও পরে প্রিয়জনদের করনীয় । "
পান্ডুলিপি পড়তে পড়তে এক যায়গায় আটকে গেলাম। সেখানে অধ্যাপক গোলাম আযম স্যারের সাথে লেখিকার কথোপকথনের কিছু অংশ তুলে দেওয়া হয়েছে। লেখাটি এত পছন্দ হয়ে যায় যে, কমরেড মাহমুদ বইটির প্রকাশক হয়ে যায়। এখানে উল্লেখ আছে লেখিকা গোলাম আযম সাহেবকে জিজ্ঞেস করেন-
"জামাই, সরকার যেভাবে কথাবার্তা বলছে তাতে আপনাকে ছাড়বে বলে মনে হয়না....!!! "
উত্তরে আযম সাহেব বলেন-
এদেশের জনগনের গড় আয়ু ৫০-৬০ বছর। সেখানে আল্লাহ্ আমাকে ৮৫ বছর বয়সেও বাঁচিয়ে রেখেছেন। ইসলামী আন্দোলন করতে এসে সব সময় মনে শাহাদতের কামনা লালন করেছি। এই বয়সে এসে মহান আল্লাহ্ তায়ালা যদি আমাকে ভালবেসে আমাকে রহম করে শাহাদতের মর্যাদা দেয় এতে তোমরা পেরেশান হচ্ছো কেন? তোমাদের দোয়া করা উচিত মহান আল্লাহ্ আমাকে যেন এই মর্যাদা থেকে বঞ্চিত না করেন...!!"
আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন তার প্রিয় বান্দাকে এভাবেই মর্যাদাশীল করবেন কে বুঝতে পেরেছিল...!! সারা বিশ্বব্যাপী আজ শোকে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে এই মহান নেতাকে হারিয়ে।। আল্লাহতালা নিজেই ঘোষনা করেছেন তিনি তার প্রিয় বান্দাদের মর্যাদা দান করেন। আল্লাহ উনাকে জান্নাতুল ফিরদাউসের মেহমান হিসাবে কবুল কিরে নিন। আমীন...
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, 'সর্বোত্তম জিহাদ হলো অত্যাচারী শাসকের সামনে সত্য কথা বলা।' (মুসনাদ আহমদ : ৩/১৯) তিনি আরও বলেন, সর্বোত্তম শহীদ হলেন হামযা(রাঃ), অতপর ওই ব্যক্তি যে জালেম শাসকের সামনে গিয়ে দাঁড়ায় আর সে তাকে সৎ কাজের আদেশ দেয় এবং অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করে। ফলে তাকে(ঐ ব্যাক্তিকে) সে(জালেম শাসক) হত্যা করে। (হাকেম, মুস্তাদরাক: ৩/১৯০; জাসসাস, আহকামুল কুরআন : ১/৭০)
Shahadatur Rahman Sohel:
অধ্যাপক গোলাম আজম মারা যাওয়ার পর সারা বিশ্বব্যাপী নানা দেশে গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কাতারের দোহাতে অবস্থিত সাইয়্যেদা আয়েশা মসজিদে শুক্রবার জুমুয়া নামাজের পর অধ্যাপক গোলাম আজমের গায়েবানা জানাযা অনুষ্ঠিত হয়েছে । জানাজায় ইমামতি করেন বর্তমান বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ইসলামিক স্কলার হিসেবে পরিচিত আল্লামা ইউসুফ আল কারযাভী। সারা তুরস্ক জুড়ে ৮৮টি গায়েবানা জানাজা হয়েছে। পাকিস্তানের বিভিন্ন প্রদেশে গোলাম আযমের গায়েবানা জানাজা পড়েন সে দেশের ইসলামপ্রিয় জনগণ। করাচিতে গায়েবানা জানাজায় ইমামতি করেন পাকিস্তান জামায়াতের সাবেক আমির সৈয়দ মোনাওয়ার হোসেন। লাহোরে গোলাম আযমের গায়েবানা জানাজা পড়ান পাকিস্তান জামায়াতের আমির ডঃ মৌলানা সিরাজুল হক। তিনি অধ্যাপক গোলাম আজমকে শহীদ হিসাবে আখ্যায়িত করেন। জানাজার সময় সিরাজুল হক বলেন, অধ্যাপক গোলাম আযমের শাহাদাতে আমরা গর্ববোধ করি।
(একবার ক্লিক করে ভিডিও চালু না হলে ২য় বার ক্লিক করুন)