Wednesday, August 16, 2017

রাছুলুল্লাহ (সাঃ)-এর বহু বিবাহের সমালোচনার জবাবে প্রখ্যাত বৃটিশ নারী অধিকার কর্মী

অনেক অবিবেচক নাস্তিক আজকাল বুঝে কিংবা না বুঝেই রাসূল স. এর বিবাহ নিয়ে কটাক্ষ বা অপ্রয়োজনীয় কথা বলতে দেখা যায়। যা সত্যিই দু:খজনক। তাদের খুবই সুন্দর জবাব দিয়েছেন Annie Besant . . .

প্রখ্যাত বৃটিশ নারী অধিকার কর্মী, সমাজতত্ত্ববিদ ও লেখিকা Annie Besant বলেন,
"কিন্তু তুমি কি আমাকে বুঝাতে চাইছ ভরা যৌবনের উচ্ছাসে পরিপূর্ণ সেই টগবগে যুবক সম্পর্কে, যে যুবক ২৪ বছর বয়সে তার চেয়ে অনেক বয়োজ্যেষ্ঠ এক মহিলাকে বিয়ে করেছিলেন এবং ২৬ বছর যাবৎ তার কাছে বিশ্বাসযোগ্য ছিলেন, তিনি ৫০ বছর বয়সের পড়তি যৌবনে এসে বিয়ে করেছিলেন কেবল যৌনাকাংখা ও যৌন তাড়না মেটাতে? না, মানুষের জীবনকে এভাবে বিচার করতে হয় না। অধিকন্তু, যদি তুমি ঐসব মহিলাদের দিকে লক্ষ্য কর যাদেরকে তিনি বিয়ে করেছিলেন, তাদের প্রত্যেকের সাথেই হয় মৈত্রীচুক্তির ব্যাপার ছিল, অথবা তাঁর ছাহাবীদের জন্য কিছু প্রাপ্তিযোগের বিষয় ছিল কিংবা মহিলাটির জন্য আশ্রয় ও নিরাপত্তার খুব প্রয়োজন ছিল।"
"Annie Besant ( http://en.wikipedia.org/wiki/Annie_Besant), The Life and Teachings of Muhammad (1932), p. 4)

ইউরোপীয় বিজ্ঞানীর দৃষ্টিতে নামাজের অসাধারণ উপকারিতা



সিজদাকে মানবদেহের ক্ষতিকর ইলেকট্রো-ম্যাগনেটিক তরঙ্গ নিষ্ক্রিয় করার উৎকৃ্ষ্ট উপায় বর্ণনা করেছেন এক ইউরোপীয় বিজ্ঞানী।

তিনি বলেছেন ,'মানুষের শরীর প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ ইলেকট্রো-ম্যাগনেটিক তরঙ্গ গ্রহণ করে।আপনার প্রাত্যাহিক ব্যবহৃত এমন সব যন্ত্র থেকেই এই তরঙ্গগুলো আপনাকে গ্রহণ করতে হচ্ছে।যেমন,গাড়ির বিভিন্ন যন্ত্রাংশ,ক্যাল্কুলেটর,মোবাইল,রিমোট কন্ট্রোল,টিভি ইত্যাদি।রাতে যে আলো পাচ্ছেন ,সেই বাতি থেকেও এই তরঙ্গগুলো আমাদের দেহে প্রবেশ করছে।অথচ এই গুলো এড়িয়ে যাওয়ার কোন সুযোগ আমাদের নেই।একভাবে বলাযায়,এই বৈ্দ্যুতিক তরঙ্গ গুলো হজম করার উল্লেখযোগ্য সোর্স আমরা।এর ফলে কী হচ্ছে? মাথাব্যথায় কুঁকড়ে যাচ্ছি,অস্বস্তি অনুভব করছি,আলস্য ঘিরে ধরছে আমাদের এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন ব্যথার সৃষ্টি করছে। এমনকি শেষ পর্যন্ত ক্যান্সারের মতো মরণব্যাধি দ্বারা আমরা আক্রান্ত হচ্ছি।
এর সমাধান কী?ইউরোপের ওই অমুসলিম বিজ্ঞানী এ নিয়ে দীর্ঘদিন গবেষণা করে দেহের ইলেকট্রো-ম্যাগনেটিক চার্জ অপসারণের যে সর্বোৎকৃ্ষ্ট উপায় বের করেছেন তা হলো,যদি কপালকে একাধিকবার মাটিতে রাখা হয়,এতে ক্ষতিকর পজিটিভ ইলেকট্রো-ম্যাগনেটক চার্জ অপসারিত হয়।বজ্রপাতের মতো পজিটিভ ইলেকট্রনিকের সিগন্যালগুলো যেমন গ্রাউন্ডের মাধ্যমেই নিষ্ক্রিয় হয়,বিষয়টি ঠিক সে রকম। তিনি সবাইকে কপালকে মাটির সাথে লাগিয়ে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন ইলেক্ট্র-ম্যাগনেটিক সিগন্যাল গুলো নিষ্ক্রিইয় করার জন্য।কপালকে বালুর সাথে লাগিয়ে রাখার জন্য উৎকৃষ্ট বলে গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে।পৃথিবীর কেন্দ্রস্থলের দিকেই মাথা রেখে কপালকে গ্রাউন্ডের সাথে ঠেকিয়ে রাখাকে এ লক্ষ্য অর্জনের উপায় হিসেবে বলেছেন।তিনি জানান, এতে ক্ষতিকর চার্জ গুলো অপসারণ সম্ভব।
এ প্রসঙ্গে ইন্টারনেটে প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলা হয়েছে,এখানে আশ্চর্য জনকভাবে সত্য যে,মক্কাই বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত পৃথিবীর কেন্দ্রস্থল এবং পবিত্র কাবাই পৃথিবীর একেবারে কেন্দ্রবিন্দু। এতে যে বিষয়টি পরিষ্কার তা হলো,দেহ থেকে ক্ষতিকর ইলেক্ট্রো-ম্যাগনেটিক সিগন্যালগুলো অপসারণের সর্বোত্তম উপায় হলো সিজদা করা, যা মুসলমানরা পাঁচ বেলা নামাযে করে থাকে।এমন একটি সৃষ্টশীল উপায়ে যিনি পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন, সেই আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের আদর্শ পথও এটি।
যে মন্তব্যের মাধ্যমে ওই নিবন্ধের সমাপ্তি ঘতে,তা হলো, মানুষের বিশ্বাস করা ও জানা উচিত,তারা স্রষ্ঠার নির্দেশ পালন করতে গিয়ে যা করবে, তা নেহাত নিজের প্রয়োজনেই করবে।



নামাযের আগে কিছুক্ষণ নামাযের মোরাকাবা [নামায সম্পর্কে চিন্তা] করা উচিত। প্রতীক্ষা ছাড়া যে নামায হয় তা হয় প্রাণহীন, হালকা নামায। সুতরাং নামাযের আগে নামায সম্পর্কে চিন্তা করা উচিত।

-----তবলীগ জামায়াতের প্রতিষ্ঠাতা হযরত মৌলানা ইলিয়াস [রহ]

Tuesday, August 15, 2017

মদিনা ইউনিভার্সিটি ও মাওলানা মওদূদী (রঃ)

লিখেছেনঃ জীবন রহমান হৃদয়

সৌদি বাদশাহ এর আমন্ত্রণে ১৯৬১ সালের ডিসেম্বর মাসে রিয়াদে পৌঁছেন সাইয়্যেদ আবুল আ'লা মওদূদী(রঃ)। আলোচনার এক পর্যায়ে বাদশাহ আশাবাদ ব্যক্ত করেন মদিনায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার। আর এ জন্য একটি পরিকল্পনা প্রণয়ন করে দিতে অনুরোধ করেন মাওলানা মওদূদী(রঃ) কে।

১৯৬১ সালের ২১ ডিসেম্বর একটি পরিকল্পনা খসড়া রচনা করেন সাইয়্যেদ আবুল আ'লা মওদূদী(রঃ)। সাথে চৌধুরী গোলাম মুহাম্মাদ ও খলিল আহমাদ হামিদী কে নিয়ে বাদশাহর প্রাসাদে গিয়ে তা পেশ করেন।


পরিকল্পনা খসড়ার(পরবর্তীতে এটাই সংবিধান) শুরুতে তিনি উল্লেখ করেন-
"এটি এমন এক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় হবে,যেখান থেকে তৈরী আলেমরা সারা বিশ্বের সকল সমস্যার সমাধানে সক্ষম হবে। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ৩ টি স্তরে ৯ বছরের শিক্ষা কার্যক্রম থাকবে। ১ম স্তরঃ ৪ বছরের।এখানে শিক্ষার্থীরা কুরআন, হাদীস, ফিকাহ, ইসলামের ইতিহাস ও সমাজ বিজ্ঞান অধ্যয়ন করবে। ২য় স্তর ৩ বছরের। এখানে থাকবে ৫টি ফ্যাকাল্টি। ৩য় স্তর ২ বছরের। এই স্তরে কোন স্কলার পূর্বের দুই স্তরের যেকোনো বিষয়ে গবেষণা করতে পারবে।"

পরিকল্পনা খসড়াটি বাদশার এতটাই পছন্দ হয় যে সঙ্গে সঙ্গে খসড়া বাস্তবায়নে সাইয়্যেদ আবুল আ'লা মওদূদী(রঃ) এর সাথে শায়েখ মোহাম্মদ আকবর, শায়েখ আব্দুল লতিফ, শায়েখ মোহাম্মদ আলী আল্ হারাকান কে নির্দেশ দেন। শুরু হয়ে যায় পুরোদমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম।
১৯৬২ সালের জানুয়ারী মাসে মাওলানা দেশে ফিরে আসেন! কিন্তু মদিনা ইউনিভার্সিটির এক জরুরী প্রোগ্রামে উপস্থিত থাকবার জন্য মাওলানা কে আবারও আমন্ত্রণ জানান সৌদি বাদশাহ। ফলে ১৯৬২ সালের মে মাসে আবারও মদিনা মনোয়ারায় উপস্থিত হন মুজাদ্দেদ সাইয়্যেদ আবুল আ'লা মওদূদী(রঃ)।

স্থাপনের প্রথমে মদিনা ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর নিযুক্ত করা হয় শায়েখ মোহাম্মদ আলী আল্ হারাকান কে। পরবর্তীতে ভাইস চ্যান্সেলর নিযুক্ত করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল পরিকল্পনাকারী ও সংবিধান প্রণয়নকারী সাইয়্যেদ আবুল আ'লা মওদূদী(রঃ)। তিনি মৃত্যু অবধি উক্ত সম্মানিত পদে বহাল ছিলেন!
১৯৬২ সালের মে মাসেই প্রতিষ্ঠা হয় বিশ্বখ্যাত সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠান 'রাবেতা আলমে আল ইসলামী'।
৩ নাম্বার ছবিতে সেই প্রতিষ্ঠা কমিটির দস্তখত সম্বলিত নথি। সবার মাঝে সাইয়্যেদ আবুল আ'লা মওদূদী রহমাতুল্লাহি আলাইহির দস্তখত।

Friday, July 21, 2017

মাওলানা মওদূদী (রহঃ) কি আলিম ছিলেন? কোন কোন ইসলামপন্থীর সমােলাচনার নায্য জবাব

লিখেছেনঃ সিরাজুল ইসলাম

মাওলানা মওদূদী (রহঃ) ও তার, চিন্তাধারা, তাঁকে যাঁরা চিনতেন এবং তাঁর সাথে কাজ করতেন তাঁরা জানতেন তিনি একজন ‘আলিম; এমনকি যাঁরা পরে তাঁর সংশ্রব থেকে দূরে সরে গিয়েছিলেন তাঁরাও তাঁর আলিম হওয়াকে অস্বীকার করতেন না। তাঁরা তাঁর সাথে অন্য বিষয়ে মতভেদ করতেন সেজন্য দূরে সরে গিয়েছিলেন। কিন্তু কিছু লোক যারা নিজেরা মূলত আলিম নয়, তারাই তাঁর বিরুদ্ধে কুৎসা রটায় এবং বলে যে তিনি আলিম ছিলেন না।


ইসলামে আলিম হবার নিয়ম কী? আলিম হবার নিয়ম হচ্ছে আপনি একজন আলিমের তত্ত্বাবধানে নির্দিষ্ট বিষয় অধ্যয়ন করবেন। এরপর আপনার উস্তায যখন নির্দিষ্ট বিষয়ে আপনি পারঙ্গম হয়েছেন বলে নিশ্চিত হবেন তখন তিনি আপনাকে ইজাযাহ [সনদ] দান করবেন। এভাবে আপনি ঐ বিষয়ে আলিম হবেন। ইসলামে আলিম হবার এটাই হচ্ছে ট্র্যাডিশনাল পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতেই আলিম হয়েছেন আমাদের আগের দিনের উলামারা, আয়িম্মা আল-মুজতাহিদীন, মুহাদ্দিসীনগণ সবাই। এখনকার মাদ্রাসা বা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পি,এইচ-ডি নেয়াটা মূলত ঐ ইজাযাহ সিস্টেম থেকে আসা পথ। উস্তায সায়্যিদ আবুল আলা মওদূদী (রহঃ) মূলত সেই ট্র্যাডিশনাল ইসলামিক ইজাযাহ পদ্ধতিতে গড়ে উঠা আলিম। তিনি ইসলামের মৌলিক সবগুলো বিষয়ে তৎকালীন ভারতের প্রসিদ্ধ আলিমদের থেকে ইজাযাহ প্রাপ্ত। তাই তাঁকে যাঁরা চিনতেন তেমন বিরোধীরাও তাঁর আলিম হওয়া নিয়ে কথা বলত না। তাঁর পরিবারের কাছে তাঁর ইজাযাহগুলো এখনও সংরক্ষিত। মুশকিল হচ্ছে তাঁর জীবনীকাররা তাঁর ইজাযাহগুলো সম্পর্কে লিখেন নাই। এমনকি জামায়াতে ইসলামী থেকেও তাঁর যে সমস্ত জীবনী বের করা হয়েছে – যেমন আব্বাস আলী খানের লিখা মাস্টারপিস 'মাওলানা মওদূদী, একটি জীবন, একটি আন্দোলন, একটি ইতিহাস'– সেগুলোতেও এগুলোর উল্লেখ নাই। এর কারণ সম্ভবত উস্তায মওদূদীর (রহঃ)প্রচার বিমুখতা। যাই হোক আমি নিজে তাঁর সম্পর্কে পড়তে গিয়ে অল্প কয়েকটা বিষয়ে জানতে পারলাম। আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও বিশিষ্ট ফকীহ এবং সালাফী আলিম ডঃ সায়্যিদ আব্দুল হালিম মুহাম্মদ হুসাইন [হাফিজাহুল্লাহ] এর লিখা 'নাযারাত ফী ফিকরি আবীল-আলা আল-মওদূদী' –ﻧﻈﺎﺭﺍﺕ ﻓﻲ ﻓﻜﺮ ﺃﺑﻲ ﺍﻷﻋﻠﻰ ﺍﻟﻤﻮﺩﻭ কিতাবে মাওলানা মওদূদীর শিক্ষাগত যোগ্যতার যে বিবরণ তিনি দিয়েছেন তা থেকে আমি পাঠকদের জন্য উল্লেখ করছি-
১। আরবী ভাষা, নাহু, সরফ, আল-মা’ক্বুলাত ওয়াল-বালাগাহ ওয়াল মা’আনীঃ

এগুলোতে তিনি ইজাজাহ লাভ করেছেন দিল্লীর দারুল

উলুমে ভারতের প্রখ্যাত আলিম মাওলানা শায়খ আব্দুস-সালাম নিয়াজীর [রহিমাহুল্লাহ] কাছ থেকে।
২। হাদীস ও উলুম আল-হাদীসঃ

শায়খ ইশফাক্বুদ্দীন কান্দাহলাবীর [রহিমাহুল্লাহ] কাছ থেকে এ বিষয়ে ইজাযাহ লাভ করেন তিনি।

৩। ফিক্বহ, তাফসীর বায়দাওয়ী এবং আল-মাতূল ফী ‘ইলম আল-মা’আনী ওয়াল-বালাগাহঃ

এ বিষয়গুলোতে তিনি ইজাযাহ লাভ করেন শায়খ শরীফুল্লাহর [রহিমাহুল্লাহ] কাছ থেকে।

৪। ইংরেজী ভাষাঃ

মৌলভী মুহাম্মদ ফাদিল এর হাতে মাত্র চার মাসে তিনি ইংরেজী ভাষা শিক্ষায় বুৎপত্তি লাভ করেন।

ডঃ শায়খ আব্দুস-সালাম আযাদী নীচে মন্তব্যে উস্তায মওদূদীর (রহঃ) শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে আরো লিখেছেনঃ

উস্তায নাদীমুল্লাহ হাসনাইন ও শায়খ নিয়ায ফাতেহ পুরির কাছ থেকে তিনি প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। মুহাম্মাদ ফাদিল এর কাছে শুধু ইংরেজি ভাষা না, ইতিহাস, দর্শন, সমাজ বিজ্ঞান ও বিভিন্ন ধর্মের তুলনামূলক আলোচনা পড়েছেন। তিনি মাওলানা ইশফাকুর রহমান কান্ধল্ভীর কাছ থেকে হাদীস ফিকহ ও আরবী সাহিত্য পাঠদানের ইজাযাহ নেন ১৯২৭ সালে এবং তিরমিযি ও মুওয়াত্তা ইমাম মালিক শিক্ষা দানের ইজাযাত গ্রহন করেন ১৯২৮ সনে। এই দু বছর তিনি সম্পূর্ণ সময় ব্যয় করেছেন লেখা পড়ার পেছনে। দেওবন্দে তিনি তাদের পত্রিকা আল জামইয়্যাতের সম্পাদক তখনই হতে পেরেছেন যখন সেখানকার আলিমরা তাঁকে সার্টিফাই করেছেন। কিছু মুর্খ লোক বলে "তিনি আলিম ছিলেন না"। তারা জানেন না মাওলানার অনেক বই বুঝতে হলে ছোট খাট আলেমদের পক্ষেও সম্ভব হবে না। ইসলামে যখন কাউকে আলিম বলা হয় তখন মাদ্রাসা পাশ কাউকে বুঝায় না। আলিম একটা বিরাট ব্যাপার। সায়্যিদ মওদূদী (রহঃ) মূলত আলিম শব্দটার যথার্থ অর্থেই আলিম। এটা কারো ভুল ভাঙ্গানোর জন্য না, বরং যারা অন্যায় অভিযোগের কোন সন্তোষজনক জবাব জানতেন না তাদের জন্য।

আমাদের ঘোষনা, আমাদের চ্যালেঞ্জ:
আল্লামা মওদুদী (রহ.) শুধু আলেমই নন, 
বরং বিশ্বব্যাপী অসংখ্য আলেমের উস্তাদ।
Please brwose this label link and see all post: 

আমাদের দোয়া: 
হে আল্লাহ! হে সমস্ত ক্ষমতার মালিক! আল্লাহ’র দ্বীনের এই একনিষ্ঠ মুজাহিদকে যারা অপবাদ দেয়, অপমান করতে চায় তাদের হয় হেদায়াত দান করো, না হয় দুনিয়া ও আখেরাতে উচিত শিক্ষাদান করো, আমিন 

Thursday, July 20, 2017

প্রফেসার গোলাম আজম কি শহীদ? একটি পর্যালোচনা।


প্রফেসার গোলাম আজম কি শহীদ? একটি পর্যালোচনা।
-  শাহাদাতুর   রহমান   সোহেল
আমি ফেইসবুকে একটা ভিডিও পোষ্ট দিয়েছিলাম। সেখানে কমেন্টে প্রফেসার গোলাম আজমের শাহাদাত সংক্রান্ত একটা পর্যালোচনা হয়েছে ।   আলোচনাটি আকর্ষনীয় হওয়ায় এখানে পোষ্ট আকারে সাজিয়ে দিলাম:

Shahadatur Rahman Sohel:
শহীদ প্রফেসর গোলাম আযম সাহেবের শেষ ইন্টারভিউ. তার গ্রেফতার প্রসঙ্গেঃ 'জীবনে বহুবার গ্রেফতার হয়েছি আর মুমিনতো মৃত্যুকে পরোয়া করেনা, আর যদি অন্যায় ভাবে মৃত্যু দেয়া হয় তাহলে শহীদ হওয়ার গৌরব পাওয়া যায় সে হিসেবে ইসলামী আন্দোলনের কর্মি হিসেবে শাহাদাত কামনা করি। সেজন্য ভয় কিসের? আল্লাহকে ছাড়া কাউকে ভয় করা তো জায়েজই না, আল্লাহ কে ছাড়া কাউকে ভয় করার অনুমতি নাই'

S.m. Hasan:

শহীদ প্রফেসর গোলাম আযম ?? শহীদ ?? how, why?

#ShahadaturRahmanSohel answer me please

Shahadatur Rahman Sohel:
আমরা হাদীস থেকে জানি- যারা সত্যিকার শাহাদাত কামনা করবে তারা বিছানায় শুয়ে মৃত্যুবরণ করলেও শহীদ হবে। প্রফেসর গোলাম আযম সাহেবের সমস্ত জীবন সাক্ষী দেয় তার শাহাদাত কামনা সত্যিকারের ছিল। তাছাড়া জালিমের কারাগারের হয়রানী সহ্য করে মৃত্যুবরণ করেও তিনি শহীদ হিসাবে গণ্য হবেন না -এটা তো আমার কাছে আশ্চর্যজনক মনে হয়। আমি মনে করি- অবশ্যই তিনি শহীদ। কেউ ভিন্নমত পোষণ করতে পারেন। হে আল্লাহ! প্রফেসর গোলাম আযমকে উচ্চপর্যায়ের শাহাদাত দান কর এবং জান্নাতুল ফিরদৌস নসীব কর, আমীন।

Abu Sayeed:
"যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি ঈমান এনেছে তারাই তাদের রবের কাছে ‘সিদ্দীক’ ও ‘শহীদ’ বলে গণ্য৷ তাদের জন্য তাদের পুরস্কার ও ‘নূর’ রয়েছে" (সুরা হাদীদ: ১৯ নং আঃ)৷ হাদীসে হযরত বারা ইবনে আযেব বর্ণনা করেছে যে, তিনি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে একথা বলতে শুনেছেন যে, "আমার উম্মতের মু'মিনগণই শহীদ। " তারপর নবী (সা) সূরা হাদীদের এ আয়াতটি তেলাওয়াত করলেন (ইবনে জারীর)৷ ইবনে মারদুইয়া হযরত আবুদ দারদা থেকে এই একই অর্থের একটি হাদীস উদ্ধৃত করেছেন যে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ "যে ব্যক্তি তার প্রাণ ও দীন বিপন্ন হবে ও কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হবে এ আশংকায় কোন দেশ বা ভূ-খণ্ড ছেড়ে চলে যায় তাকে আল্লাহর কাছে 'সিদ্দীক'বলে লেখা হয়। আর সে যখন মারা যায় তখণ আল্লাহ শহীদ হিসেবে তার রূহ কবজ করেন। একথা বলার পর নবী (সা) এ আয়াতটি তেলাওয়াত করলেন৷
অধ্যাপক গোলাম আযমের চতুর্থ ছেলে সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহিল আমান আযমী তাঁর পিতাকে আল্লাহ যাতে শহীদ হিসাবে কবুল করেন এজন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন। একজন মুসলমান নামাজ পড়ে না্মাজ কবুলের জন্য দোয়া করে। তেমনি একজন শহীদ ব্যক্তিরই শাহাদাত কবুলের জন্য দোয়া করা হয়। মহান আল্লাহ অধ্যাপক গোলাম আযমকে সর্বোচ্চ পর্যায়ের শহীদ হিসাবে কবুল করুন, আমীন
একদিন লেখিকা মাসুদা সুলতানা রুমী আপার বাসায় গেলে তার লেখা একটি পান্ডুলিপি চোখে পড়ে। নাম দিয়েছেন ''মরনের আগে ও পরে প্রিয়জনদের করনীয় । "
পান্ডুলিপি পড়তে পড়তে এক যায়গায় আটকে গেলাম। সেখানে অধ্যাপক গোলাম আযম স্যারের সাথে লেখিকার কথোপকথনের কিছু অংশ তুলে দেওয়া হয়েছে। লেখাটি এত পছন্দ হয়ে যায় যে, কমরেড মাহমুদ বইটির প্রকাশক হয়ে যায়। এখানে উল্লেখ আছে লেখিকা গোলাম আযম সাহেবকে জিজ্ঞেস করেন-
"জামাই, সরকার যেভাবে কথাবার্তা বলছে তাতে আপনাকে ছাড়বে বলে মনে হয়না....!!! "
উত্তরে আযম সাহেব বলেন-
এদেশের জনগনের গড় আয়ু ৫০-৬০ বছর। সেখানে আল্লাহ্‌ আমাকে ৮৫ বছর বয়সেও বাঁচিয়ে রেখেছেন। ইসলামী আন্দোলন করতে এসে সব সময় মনে শাহাদতের কামনা লালন করেছি। এই বয়সে এসে মহান আল্লাহ্‌ তায়ালা যদি আমাকে ভালবেসে আমাকে রহম করে শাহাদতের মর্যাদা দেয় এতে তোমরা পেরেশান হচ্ছো কেন? তোমাদের দোয়া করা উচিত মহান আল্লাহ্‌ আমাকে যেন এই মর্যাদা থেকে বঞ্চিত না করেন...!!"
আল্লাহ্‌ রাব্বুল আলামীন তার প্রিয় বান্দাকে এভাবেই মর্যাদাশীল করবেন কে বুঝতে পেরেছিল...!! সারা বিশ্বব্যাপী আজ শোকে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে এই মহান নেতাকে হারিয়ে।। আল্লাহতালা নিজেই ঘোষনা করেছেন তিনি তার প্রিয় বান্দাদের মর্যাদা দান করেন। আল্লাহ উনাকে জান্নাতুল ফিরদাউসের মেহমান হিসাবে কবুল কিরে নিন। আমীন...
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, 'সর্বোত্তম জিহাদ হলো অত্যাচারী শাসকের সামনে সত্য কথা বলা।' (মুসনাদ আহমদ : ৩/১৯) তিনি আরও বলেন, সর্বোত্তম শহীদ হলেন হামযা(রাঃ), অতপর ওই ব্যক্তি যে জালেম শাসকের সামনে গিয়ে দাঁড়ায় আর সে তাকে সৎ কাজের আদেশ দেয় এবং অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করে। ফলে তাকে(ঐ ব্যাক্তিকে) সে(জালেম শাসক) হত্যা করে। (হাকেম, মুস্তাদরাক: ৩/১৯০; জাসসাস, আহকামুল কুরআন : ১/৭০)

Shahadatur Rahman Sohel: 
অধ্যাপক গোলাম আজম মারা যাওয়ার পর সারা বিশ্বব্যাপী নানা দেশে গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কাতারের দোহাতে অবস্থিত সাইয়্যেদা আয়েশা মসজিদে শুক্রবার জুমুয়া নামাজের পর অধ্যাপক গোলাম আজমের গায়েবানা জানাযা অনুষ্ঠিত হয়েছে । জানাজায় ইমামতি করেন বর্তমান বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ইসলামিক স্কলার হিসেবে পরিচিত আল্লামা ইউসুফ আল কারযাভী। সারা তুরস্ক জুড়ে ৮৮টি গায়েবানা জানাজা হয়েছে। পাকিস্তানের বিভিন্ন প্রদেশে গোলাম আযমের গায়েবানা জানাজা পড়েন সে দেশের ইসলামপ্রিয় জনগণ। করাচিতে গায়েবানা জানাজায় ইমামতি করেন পাকিস্তান জামায়াতের সাবেক আমির সৈয়দ মোনাওয়ার হোসেন। লাহোরে গোলাম আযমের গায়েবানা জানাজা পড়ান পাকিস্তান জামায়াতের আমির ডঃ মৌলানা সিরাজুল হক। তিনি অধ্যাপক গোলাম আজমকে শহীদ হিসাবে আখ্যায়িত করেন। জানাজার সময় সিরাজুল হক বলেন, অধ্যাপক গোলাম আযমের শাহাদাতে আমরা গর্ববোধ করি।    

(একবার ক্লিক করে ভিডিও চালু না হলে ২য় বার ক্লিক করুন)


এই লিংকটি ব্রাউজ করে প্রবন্ধটি পাঠ করুন প্লীজ: শাহাদাতের মর্যাদা 


Popular Posts