সাংবাদিকতা একটি মহান পেশা, সাংবাদিকরা দেশের জাগ্রত বিবেক। সাংবাদিকদের প্রধান ও একমাত্র দায়িত্ব হচ্ছে সত্যের সংরক্ষণ ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করা। তাই জ্ঞানী, গুণী, কবি-সাহিত্যিকরা বলে থাকেন, সাংবাদিকদের কলমের ক্ষমতা তরবারির চেয়ে ধারালো ও শক্তিশালী। সহজেই অনুমেয় যে, কলম এমন একটি অস্ত্র যা সর্বাধুনিক মারণাস্ত্রের চেয়েও মারাত্মক। এই কলমের সামান্য দুই ফোঁটা কালি পৃথিবীর সমস্ত ধনসম্পদের চেয়েও বেশি মূল্যবান। সেই কলম যখন কোনো সাংবাদিকের হাতের অস্ত্র হয় তখন তার ক্ষমতাও বেড়ে যায় অন্তহীনভাবে। সাংবাদিকগণ সমাজ ও দেশের অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ও অত্যাবশ্যকীয় শ্রেণি। তাদের উচিত সত্য ও নিরপেক্ষ সংবাদ পরিবেশন করা। এ নিয়মের ব্যতিক্রম ঘটলে সংবাদপত্রের চরিত্র নষ্ট হয়। এ ধরনের সাংবাদিকতাকে সাম্প্রতিককালে হলুদ সাংবাদিকতা নামে অভিহিত করা হচ্ছে। সংবাদপত্র হচ্ছে লোকশিক্ষক। জনকল্যাণের জন্য তা যেন সঠিকভাবে কাজ করে সে দিকে সাংবাদিকদের আন্তরিক হতে হবে। তাহলে সংবাদপত্র তার সঠিক ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হবে।
সংবাদপত্রে যেমন আছে সৎ নির্ভীক সাংবাদিক, তেমনি আছেন অসৎ সাংবাদিক। অথচ নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য সংবাদ পরিবেশনই সংবাদপত্র এবং সাংবাদিকের প্রধান কর্তব্য। ইসলাম ও সাংবাদিকতা বিষয়ে গবেষণা করতে গিয়ে জানা গেল চৌদ্দ শত বছর আগে সাংবাদিকতা বিষয়ে মহান আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সা: যে গাইডলাইন দিয়ে গেছেন তা এক কথায় অনন্য।
ইসলামে সাংবাদিকতা এক ধরনের আমানত। আর এ আমানত হচ্ছে, যে কোনো তথ্য ও সংবাদকে বস্তুনিষ্ঠভাবে গণমাধ্যমে তুলে ধরা। নিজস্ব চিন্তা কিংবা দল মতের রঙচঙ মাখিয়ে সংবাদকে আংশিক বা পুরোপুরি পরিবর্তন করে উপস্থাপন করা কিছুতেই ইসলাম সমর্থিত নয়। এ ক্ষেত্রে করণীয় হলো কোনোরূপ সংযোজন-বিয়োজন ছাড়াই সংবাদ পরিবেশন করা এবং সংবাদের অঙ্গসজ্জায় কেবল নিরেট সত্যকেই তুলে ধরা। আল্লাহ বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে ভয় করো এবং সঠিক কথা বলো।’ (সূরা আহজাব : ৭০) এ সম্পর্কে পবিত্র হাদিস শরীফে অত্যন্ত চমৎকার একটি হাদিস বর্ণিত হয়েছে। রাসূল সা: বলেন, ‘আল্লাহ ঐ ব্যক্তির চেহারাকে উজ্জ্বল করুন যিনি আমাদের থেকে যা শুনেছেন তা হুবহু ধারণ করে অন্যের কাছে অবিকল কায়দায় পৌঁছে দিয়েছেন।’ (আবু দাউদ, তিরমিজি) সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে আল্লাহর রাসূলের এই নির্দেশনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশের আগে তথ্য যাচাই-বাছাই করতে হয়। যে খবরটি মিডিয়ায় প্রকাশিত হচ্ছে তা আদৌ সত্য কিনা তা যাচাইয়ের নিয়ম আছে সংবাদ জগতে।
কোনো ধর্ম, আদর্শ, মতবাদ ও সভ্যতাই মানুষকে মিথ্যাবাদী হতে শিখায় না। ইসলামও এর ব্যতিক্রম নয়। ইসলামে মিথ্যা বলা মহাপাপ বা কবিরা গুনাহ। রাসূল সা: বলেন, আমি কি তোমাদের কবিরা গুনাহ সম্পর্কে অবহিত করব না? কথাটি তিনি তিনবার বলেছেন। সাহাবায়ে কিরাম বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! হ্যাঁ, অবশ্যই। তিনি বলেন, আল্লাহর সঙ্গে কাউকে অংশীদার সাব্যস্ত করা এবং মা-বাবার অবাধ্য হওয়া। এরপর হেলান দেয়া থেকে সোজা হয়ে বসে রাসূল সা: বললেন, মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া ও মিথ্যা সংবাদ প্রচার করা। (বুখারি) তাই সংবাদের তথ্য যাচাই ও সত্যতা নিরূপণ করা সাংবাদিকের অপরিহার্য কর্তব্য। এ ব্যাপারে পবিত্র কুরআনেও রয়েছে চমৎকার দিকনির্দেশনা। এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের কাছে যদি কোন পাপাচারী ব্যক্তি সংবাদ নিয়ে আসে তবে তোমরা তা যাচাই-বাছাই করে নাও, যাতে তোমরা অজ্ঞতাবশত কোনো সম্প্রদায়ের ক্ষতি সাধনে প্রবৃত্ত না হও এবং পরে যাতে নিজেদের কৃতকর্মের জন্য তোমাদের অনুতপ্ত না হতে হয়।’ (সূরা হুজুরাত : ৬)
সাংবাদিকদের জন্য কুরআনের এই আয়াতটি অতি গুরুত্বপূর্ণ। সংবাদকর্মীরা যদি কোনো তথ্য সঠিকভাবে যাচাই না করে মিডিয়ায় প্রচার করে দেন, তাহলে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে। যার মাশুল ঐ সংবাদকর্মী দিতে পারবে না। এ কারণে আল্লাহ তায়ালা সংবাদের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই না করে সংবাদ গ্রহণ ও পরিবেশন নিষেধ করেছেন। অনেক সংবাদকর্মী লোকমুখে যা শুনেন তাই মিডিয়ায় প্রচার করে দেন। এটিও ইসলামে নিষিদ্ধ। আল্লাহর রাসূল সা: বলেন, একজন ব্যক্তি মিথ্যুক হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, সে যা শুনে তাই বলে বেড়ায়। (মুসলিম শরিফ, আবু দাউদ)
সততা একজন সাংবাদিকের সবচেয়ে বড় গুণ। অসৎ লোককে কেউ বিশ্বাস করে না। অনেক যোগ্যতা ও দক্ষতা থাকলেও অসততার কারণে একজন সাংবাদিকের অর্জিত সব সম্মান ধুলায় মিশে যেতে পারে। সাংবাদিকতার পথ হচ্ছে লোভ ও প্রলোভনের পিচ্ছিল পথ। সেই প্রলোভনকে জয় করতে না পারলে কোনো সাংবাদিকের পক্ষে দেশ ও সমাজের জন্য দায়িত্ব পালন অর্থহীন। সে হিসেবে বলা যায়, সাংবাদিকের হাতে কলম আছে বলেই তারা সত্যকে মিথ্যা আর মিথ্যাকে সত্য বলতে পারেন না। এমনটি সুস্থ সাংবাদিকতার বিপরীত কাজ। এটা অন্যায়ও বটে। ক্ষেত্রবিশেষ দেখা যায়, অনেক সাংবাদিক মিথ্যা ও বানোয়াট খবর প্রচার করে সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি করছেন। লোভের বশবর্তী হয়ে অন্যায়কে সমর্থন করছেন। ইসলামী শরিয়ত এ ধরনের ন্যক্কারজনক কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য বিশেষ নির্দেশ প্রদান করেছে। নিষেধ করা হয়েছে কুপ্রবৃত্তির অনুসারী হওয়ার। ইসলাম বলেছে মানবকল্যাণের জন্য সত্য সংবাদ পৌঁছে দিতে। তাই সংবাদ সংগ্রহের সময় চোখ, কান, বিবেক খোলা রাখতে হবে।
ব্যক্তিস্বার্থ কিংবা দলীয়স্বার্থ বিবেচনা করে অনেক সাংবাদিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন করেন। শোনা যায়, নিউজ রুমে অনেক নিউজ কিল করা হয়। এমনটি কিছুতেই কাম্য নয়। সত্য গোপন করাকে ইসলাম পাপ হিসেবে বিবেচনা করে। আল্লাহপাক বলেন, ‘তোমরা সাক্ষ্য গোপন করো না, আর যে ব্যক্তি তা গোপন করে, অবশ্যই তার অন্তর পাপী।’ (সূরা আল বাকারা : ২৮৩) জনস্বার্থে আসল তথ্য গোপন না করে তা প্রকাশ করা উচিত। মানুষ তথ্য জানার জন্য অধীর আগ্রহে পত্রিকা পড়েন কিংবা টিভির পর্দায় চোখ রাখেন। জ্ঞাত বিষয়কে গোপন করা সম্পর্কে পবিত্র হাদিসে কঠোর নিন্দা করা হয়েছে। হযরত আবদুল্লাহ বিন আমর রা: হতে বর্ণিত, রাসূল সা: বলেন, যে ব্যক্তি জ্ঞাত বিষয়কে গোপন করল কিয়ামতেরর দিন আল্লাহ তায়ালা তাকে আগুনের লাগাম পরাবেন। (সহীহ ইবনে হিব্বান, মুস্তাখারাজ আলা সহিহ মুসলিম) ব্যক্তিগত আক্রোশে কাউকে হেয় করার মানসে কারো একান্ত ব্যক্তিগত তথ্য জনগণের সামনে তুলে ধরা ইসলামের দৃষ্টিতে খুবই অন্যায় কাজ। আল্লাহ বলেন, ‘কোনো সম্প্রদায়ের প্রতি বিদ্বেষ তোমাদের কখনো যেন সুবিচার বর্জনে প্ররোচিত না করে।’ (সূরা মায়েদা : ৮) হাদিসে এসেছে হযরত ইবনে আব্বাস রা: হতে বর্ণিত, রাসূল সা: বলেন, যে ব্যক্তি কোনো মুসলিম ব্যক্তির দোষ গোপন রাখল আল্লাহ তায়ালা (দুনিয়া)ও আখিরাতে তার দোষ গোপন রাখবেন। (বুখারি শরিফ)
তবে কোনো ব্যক্তির দোষ যদি এমন এমন পর্যায়ের হয় যে, তাতে সমাজ ও রাষ্ট্রের ক্ষতি হয় তখন তা উন্মুক্ত করে তার আসল চরিত্র প্রকাশ করে দেয়া দরকার, যাতে সে আর মানুষের ক্ষতি না করতে পারে। আমাদের দেশের অনেক জ্ঞানী, গুণী, বুদ্ধিজীবী আছেন যারা তাদের লেখনীতে বিরুদ্ধ মতাদর্শের লোকদের শক্তভাবে তিরস্কার কিংবা চরিত্র হনন করেন, যা একেবারে কাম্য নয়। শুধুমাত্র বিপরীত মতাদর্শের হওয়ার কারণে জনগণের সামনে তার ইজ্জত নিয়ে ছিনিমিনি খেলা ইসলাম হারাম মনে করে। এ সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ! কেউ যেন অপর কাউকে উপহাস না করে। কেননা, সে উপহাসকারী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে এবং কোনো নারী অপর নারীকেও যেন উপহাস না করে। কেননা সে উপহাসকারিণী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে। তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ করো না এবং একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না। কেউ বিশ্বাস স্থাপন করলে তাকে মন্দ নামে ডাকা গুনাহ। যারা এহেন কাজ থেকে তওবা না করে, তারাই জালিম। (সূরা আল হুজুরাত ১১) সাংবাদিকতা ইসলামী দাওয়াতেরই একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, আর তা কিছুতেই নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর জন্য সীমাবদ্ধ নয়। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তুমি বলো, হে মানবসমাজ, নিশ্চয়ই আমি তোমাদের সবার কাছে আল্লাহর রাসূল।’ (সূরা আরাফ : ১৫৮) অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘মহান সে সত্তা, যিনি তার বান্দার প্রতি ফোরকান (কুরআন) অবতীর্ণ করেছেন, যাতে সে বিশ্ব জগতের জন্য সতর্ককারী হতে পারে।’ (সূরা আল ফোরকান : ১) কাজেই সব ধর্ম, বর্ণ, জাতি গোত্র, শ্রেণি, পেশার মানুষকে নিয়েই সংবাদ পরিবেশন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে বিশেষ কোনো সম্প্রদায়কে প্রাধান্য দেয়ার সুযোগ নেই। কোনো শক্তির কাছে মাথা নত না করে ভয়শূন্য চিত্তে সংবাদ পরিবেশন করাই ইসলামের দাবি। রাসূলুল্লাহ সা: বলেন, ‘অত্যাচারী শাসকের সামনে সত্য উচ্চারণ করাই উত্তম জিহাদ।’ আল্লাহপাক বলেন, ‘এবং তোমাদের মধ্যে এমন একটা জামাত থাকা উচিত যারা কল্যাণের দিকে আহবান করবে। অর্থাৎ সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ করবে এবং এরাই সফলকামী।’ (সূরা আলে ইমরান : ১০৪)
বর্তমান প্রেক্ষাপটে যে লেখনীটার সবচেয়ে বেশি দরকার এবং সবারই কাম্য তা হচ্ছে নির্ভীক সাংবাদিকতা। একজন নির্ভীক সাংবাদিকের ক্ষুরধার মসির আঘাতে ভেঙে চুরমার হয়ে যায় মাকড়সার জালের মতো অত্যাচারী শাসকদের নীলনকশা। কারণ একজন নির্ভীক সাংবাদিকের ধারালো কলমের ফলা শানিত তরবারির চেয়েও অসীম ক্ষমতাময় ও প্রলয়ঙ্করী। অন্য হাদিসে এসেছে, ‘হযরত মুয়াজ রা: বললেন, রাসূল সা: আমাকে বলেছেন, হে মুয়াজ, তুমি সত্য বলতেই থাকো যদিও তা তিক্ত হয়। মূলত সত্য প্রকাশে আপসহীনতা একজন আদর্শ সাংবাদিকের অন্যতম কর্তব্য। সাংবাদিকরা নতজানু হয়ে কাজ করলে গণমাধ্যমের কার্যকারিতাই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে। ইসলাম সাংবাদিকদের সত্য বলার অধিকার আরো সুপ্রতিষ্ঠিত করেছে।
একজন সাংবাদিক সর্বদা সত্য ও সততার প্রতি একনিষ্ঠ থাকবেন; তিনি সব ধরনের নেতিবাচকতা এড়িয়ে ইতিবাচকতাকে অগ্রাধিকার দেবেন। খারাপ শব্দ ও খারাপ দৃশ্য এড়িয়ে মার্জিত শব্দ ও নির্দোষ চিত্র তুলে ধরতে সচেষ্ট থাকবেন। এ প্রসঙ্গে কুরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর আমার বান্দাদেরকে বল, তারা যেন এমন কথা বলে, যা অতি সুুন্দর। (সূরা বনি ইসরাইল : ৫৩) যেহেতু আল্লাহ তায়ালা সাংবাদিকদের মেধা দিয়েছেন, যোগ্যতা দিয়েছেন, তারা লিখতে পারেন, নতুন নতুন অনবদ্য রচনা ও গঠনমূলক লেখা সৃষ্টি করতে পারেন, তাই তাদেরকে অবশ্য অবশ্যই মনে রাখতে হবে, তাদেরকে প্রদান করা এই যোগ্যতা মহান আল্লাহর এক অসীম নিয়ামত। এটি একটি আমানত। এই আমানতকে কোনোভাবেই বিনষ্ট করা যাবে না, হেলায় ফেলায় খোয়ানো যাবে না। কেননা পবিত্র কুরআনে মুমিনদের গুণাবলী প্রকাশ করতে গিয়ে আল্লাহ তায়ালা আমানতের কথা বলেছেন। মহান আল্লাহ বলেন, ‘যারা তাদের আমানত ও চুক্তিকে রক্ষা করে।’ (সূরা মুমিনুন : ৮) অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহ তায়ালা তোমাদের নির্দেশ দিচ্ছেন যে, তোমরা প্রত্যেকের আমানত সঠিকভাবে আদায় কর।’ (সূরা আন নিসা : ৫৮) পবিত্র হাদিসে আমানতের খেয়ানত করাকে মুনাফিকের আলামত হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
মিথ্যা তথ্য প্রকাশ জঘন্য অপরাধ। ইসলামে মিথ্যার কোনো আশ্রয় নেই। কুরআন ও হাদিসের বহু জায়গায় মিথ্যাকে হারাম ঘোষণা করা হয়েছে। মিথ্যাতো নয়ই বরং আল্লাহ তায়ালা সঠিক কথা বলতে বলেছেন। ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সঠিক কথা বল।’ (সূরা আল আহজাব : ৭০)
সুতরাং একজন আদর্শ সাংবাদিকের দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, অন্যায়, অত্যাচার, অনৈতিক ও অসামাজিক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। মিথ্যা ও পাপের বিরুদ্ধে কলম ধরতে হবে। সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ তথা অধর্মের বিরুদ্ধে আপসহীন সংগ্রামের বজ্রকঠিন শপথ গ্রহণ করতে হবে। আজ সমাজের অধিকার বঞ্চিত ও অসহায় জনতা কলম সৈনিকদের প্রতি নির্বাক চেয়ে আছে। এখনো তাদের মনে বিশ্বাস, মেঘে ঢাকা সূর্যটা উদয়ের পথে, আলো ছড়াবে দিগদিগন্তে। মনে রাখতে হবে, সংবাদপত্র কর্মীদের যাত্রা বাহুবলে নয়, বিদ্যাবলে। অসি বলে নয়, মসি বলে। মসি ও বিদ্যা নামক সাংবাদিকদের সেই ক্ষুব্ধ শক্তি আবার ফেনিল সমুদ্রের তরঙ্গের মতো উদ্বেলিত হোক। শুধু সত্যের জন্য, আম-জনতার জন্য। এমনি সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের প্রত্যাশায় সম্পূর্ণ আল্লাহর ওপর ভরসা করে সাহসের সঙ্গে, নিঃসংকোচে, নিঃস্বার্থভাবে, সব ভয়ভীতির ঊর্ধ্বে থেকে যখন কলম সৈনিকরা অস্ত্র চালনা করতে থাকবেন তখন কোনো রক্তচক্ষু কিংবা প্রলোভন নির্ভীক সাংবাদিকতার অগ্রযাত্রাকে কেউ রুখতে পারবে না ইনশাআল্লাহ।
লেখক : প্রাবন্ধিক , গবেষক
Source: www.chhatrasangbadbd.com