(জবাবদানকারী একজন ক্বওমী আলেম:) বন্ধুরা, সমালোচকরা প্রায়ই বলে থাকেন, বিশেষ করে ক্বওমী ঘরনার লোকজন গিবত করে বেড়ান জামায়াত শিবিরের সারে তিন হাত বডিতে ইসলাম নেই এবং তাদের আমল নেই।
আমার সন্দেহ হয় সমালোচক শ্রেণী ইসলাম ও আমল কাকে বলে তার মূল তত্ত্ব কথা জানেন কি না? জামায়াত শিবিরের লোকজন কোরআন সুন্নাহ ও ঈমান আমলকে যে ভাবে প্রাকটিস করে থাকেন, আমি জোর গলায় বলতে পারি সমালোচক শ্রেণী তার সিকিভাগও করেন না।
জামায়াত শিবিরের লোকজনের উপর স্বরণকালের যে ভয়াবহ জুলুম নির্যাতন চলছে, নিকট অতীতে তার নযির আছে কি না আমার জানা নেই।
এমন একটি দলের নাম বলুন, এতো জুলুম নির্যাতনের পর টিকে থাকতে পারে? তার পর ও যারা বলে বেড়ায় জামায়াত শিবিরের আমল ঠিক নেই, তাদের ব্যপারটি আল্লাহর হাওলায় ছেড়ে দিলাম। আমি বিশ্বাস করি সমালোচক শ্রেণীর গোটা আমলকে যদি একত্রিত করা হয়, একজন মাজলুম জামায়াতী ভাইয়ের সমান হবে না।
আল্লাহর রহমত আছে বলেই একটি নিরীহ ক্ষুদ্র দল বাতিলের মোকাবেলায় ইস্পাত কঠিন ধৈর্য্যের পরীক্ষা নিয়ে টিকে আছে।
তবে এ কথা ঠিক যে, জামায়াত শিবিরের কিছু লোক শার্ট প্যান্ট ও কোর্ট টাই পড়ে থাকেন। আমি বলি তারা যদি পায়জামা-পাঞ্জাবি পড়তো, তো ভালো ছিল।
মালয়শিয়া ও মিশরের বড়ো বড়ো খতীবগণ শার্ট প্যান্ট ও কোর্ট টাই পড়ে খুতবা পাঠ করে থাকেন, যদি শার্ট প্যান্ট ও কোর্ট টাই এতোই খারাপ হতো, তাহলে তারা পড়ে কেন? আমি জানি যারা শার্ট প্যান্ট ও কোর্ট টাইয়ের সমালোচনা করে থাকেন, তারা টাই প্যান্ট পড়লে ওয়ালা থেকে নিয়মিত চাঁদা কালেকশন করে থাকেন, টাই প্যান্ট পড়লে ওয়ালার সাথে তাদের দহরম-মহরম চোখে পড়ার মতো। তখন কি তাদের শরম লাগে না! কথায় বলে: যারে দেখতে নারি, তার চলন বাঁকা !
জানি তার পর ও সমালোচকদের মুখ বন্ধ হবে না। আসুন দরদ নিয়ে একে অপরের কাছাকাছি আসার চেষ্টা করি! আল্লাহ তৌফিক দান করুন আমীন।
এইচ,এম,হুমায়ুন কবির কলাপাড়া (পটুয়াখালী) : বৈরি আবহাওয়ার মধ্যে ঈদুল আযহার ছুটিতে পর্যটকদের পদচারণায় এখনই মুখরিত হয়ে উঠেছে সূর্যোদয় আর সূর্যাস্তের বেলাভূমি সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটা।
যেখানে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের অপরূপ দৃশ্য চোখে পড়বে দিগন্ত জোড়া আকাশ আর সমুদ্রের রাশি রাশি নীল জল আর সমুদ্রের নীল জলের তরঙ্গায়িত ঢেউ কাঁচভাঙ্গা ঝন ঝন শব্দের মত আছরে পড়ছে কিনারায় ও উড়ে যাচ্ছে সাদা গাংচিলের দল এদিক ওদিক-মাছ শিকারের জন্য লড়াকু জেলেরা ট্রলারে ও নৌকায় ছুটে যাচ্ছে গভীর সমুদ্রে তা উপভোগ করা যায়।
বৈরি আবহাওয়ার মধ্যেও ঈদুল আযহার আনন্দ উপভোগ করতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার দর্শনার্থী পরিবার পরিজন নিয়ে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে এসেছেন। কলাপাড়া-কুয়াকাটা নদীতে বর্তমানে তিনটি ব্রিজ হওয়ায় সড়ক যোগাযোগ ভাল থাকায় এ বছর সবার্ধিক পর্যটকের আগমনে কুয়াকাটা উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে।
দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসা ভ্রমণ পিপাসু পর্যটকদের উন্মাদনায় পুরো সৈকতে এখন আনন্দময় পরিবেশ বিরাজ করছে। নানা বয়সি পর্যটকদের আগমনে রাখাইন মার্কেট, ঝিনুকের দোকান, খাবারঘর, চটপটির দোকানসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কেনাকাটার ধুম পরেছে। সোমবার বিকেল থেকে হোটেল মোটেলগুলোতে পর্যটকরা উঠতে শুরু করেছে। সৈকতের কোথাও তিল ধারণের ঠাঁই নাই। কখনো মেঘ, কখনো বৃষ্টি। এরই মাঝে সৈকতে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয়-সূর্যাস্ত দেখা, লাল কাকড়ার অবিরাম ছোটাছুটি, বালুকা বেলায় প্রিয়জনের সাথে হাঁটাহাঁটি, আর সমুদ্রের মোহনীয় গর্জন শুনতে দেশের নানা প্রান্ত থেকে কুয়াকাটায় ছুটে এসেছেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার নানা বয়সের হাজারো মানুষ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সৈকত লাগোয়া নারিকেল বাগান, ইকোপার্ক, ইলিশপার্ক, জাতীয় উদ্যান, শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধ বিহার, সীমা বৌদ্ধ বিহার, সুন্দরবনের পূর্বাঞ্চলখ্যাত ফাতরার বনাঞ্চল, ফকির হাট, গঙ্গামতি, কাউয়ার চর, আড়াই শতবর্ষী নৌকা, লেম্বুর চর, শুঁটকিপল্লী ও কুয়াকাটার জিরো পয়েন্টে শিশু-কিশোর যুবক যুবতীসহ নানা বয়সী পর্যটকদের পদচারণায় এখন মুখরিত হয়ে উঠেছে। সৈকতে বেড়াতে আসা নানা বয়সী পর্যটকরা স্মার্ট ফোনে সেলফি ও ভিডিও ক্লিপস সাথে সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছে। এদিকে পর্যটক ও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা দিতে বিভিন্ন পয়েন্টে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর ব্যাপক টহল অব্যাহত রয়েছে।
ঈদের ছুটিতে যশোর থেকে ভ্রমণে আসা ব্যবসায়ী কালাম ও নুবাইবা দম্পতি জানান, সৈকতের অপরূপ দৃশ্য দেখে অসাধারণ লেগেছে। দর্শনীয় স্পটে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঘুরে দেখেছি। শিক্ষার্থী রাইকা, নওসিন ও মিশু জানান, প্রথমবারের মত কুয়াকাটায় এসেছি। খুব ভাল লেগেছে। সুযোগ পেলে প্রকৃতির টানে বার বার ছুটে আসব এখানে। অপর এক শিক্ষার্থী উম্মে কবির হাবিবা বলেন,সমুদ্রে উন্মাদনার সাথে গোছল করার ছবি তুলে এফবিতে পোস্ট করেছি। যোগাযোগ, অপরূপ সৈকতের সৌন্দার্য্য এছাড়াও একই স্থানে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের লোভনীয় দৃশ্য অবলোকন করা যায়। তাই বন্ধুদেরকে এফবির মাধ্যমে আহ্বান করেছি বলে ওই শিক্ষার্থী জানিয়েছেন।
কুয়াকাটা সমুদ্র রিসোর্ট হোটেল ব্যবস্থাপনা পরিচালক. বাংলা ভিসনের সাংবাদিক মো. মিরন জানান, ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের ঢল নেমেছে। ঈদের পরদিন থেকে কুয়াকাটায় আগাম বুকিং অনুযায়ী পর্যটক রয়েছে। চলতি মাসের ১৬ তারিখ পর্যস্ত এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি ধারণা করছেন। ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের মো.খলিলুর রহমান জানান, ঈদ উপলক্ষে পর্যটকদের ব্যাপক চাপ রয়েছে। নিরাপত্তা দিতে ট্যুরিস্ট পুলিশসহ থানা পুলিশ দর্শনীয় স্থানে টহল রয়েছে।
এ দিকে কলাপাড়া রাবনা বাঁধ নদীর মোহনায় দেশের তৃতীয় সমুদ্র বন্দর পায়রায় ঈদের দিন বিকেল থেকে দর্শনার্থীদের পদভারে গোটা বন্দর এলাকা মুখরিত হয়ে ওঠে। প্রতিদিন শত শত লোক পায়রা সমুদ্র বন্দরে পরিবারÑপরিজন নিয়ে ঘুরতে আসেন। এটিও এখন পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে। রাবনাবাঁধ নদীর মোহনায় দেশের তৃতীয় সমুদ্র বন্দর পায়রায় ঈদের দিনে ঘুরতে আসা বাকেরগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের ছাত্রী মোসা. নাজরাতুন নাইম রুজি বলেন, দেশের তৃতীয় সমুদ্র বন্দর পায়রা বন্দর কলাপাড়ায় হওয়ায় দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষ হিসেবে আমরা গর্বিত। এখানে ঈদের ছুটিতে ঘুরতে এসে খুবই ভালোই লেগেছে। ভবিষ্যতে এখানে পর্যটকদের কাছে আরো আকর্ষণীয় স্থান হয়ে দাঁড়াবে।
এ ব্যাপারে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কুয়াকাটা বীচ ম্যানেজম্যান্ট কমিটির সভাপতি মো. মুনিবুর রহমান বলেন, কুয়াকাটায় আসা পর্যটকদের নিরাপত্তা বিধানের জন্য আইনশৃঙ্গলা বাহিনীকে কঠোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।